আত্মগোপন থেকে বাড়ি ফিরতেই আ.লীগ নেতাকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন

রাজশাহীর পুঠিয়ায় বানেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অলিউজ্জামানকে পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ছবিটি পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তোলা।
সংগৃহীত

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল ওয়াদুদের চাচা অলিউজ্জামান ওরফে মন্টু মাস্টার (৬৮) আত্মগোপন থেকে গত পরশু রাতে বাড়ি ফেরেন। আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে তাঁকে ধরে নিয়ে গিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।

তাঁর পরিবার অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির স্থানীয় নেতা–কর্মীরা অলিউজ্জামানকে নির্যাতন করেছেন।

অলিউজ্জামান একজন স্কুলশিক্ষক ছিলেন। সংসদ সদস্য আবদুল ওয়াদুদের ভাই শেখ আবদুল হানিফ জানিয়েছেন, উপজেলার বিড়ালদহ গ্রামে তাঁদের বাড়ি। ৫ আগস্টের ঘটনার পর থেকে তাঁর চাচা অলিউজ্জামান আত্মগোপনে ছিলেন। গত পরশু রাতে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। আজ শনিবার সকালে তিনি পাশের মাইপাড়া বাজারে চা পান করতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বিএনপির লোকজন তাঁকে ধরে নিয়ে গিয়ে বিড়ালদহ বাজারের পাশে নন্দনপুর সড়কে একটি বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক পিটুনি দেন।

অলিউজ্জামান বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কুমার বিশ্বাস জানিয়েছেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অলিউজ্জামানকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের গুরুতর জখম রয়েছে।

বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত মিঠুন, আহসান ও সীমান্ত এই হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে লোকমুখে শুনেছেন অলিউজ্জামানের ভাতিজা আবদুল ওয়াদুদ।

তিনি বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাঁর চাচাকে উদ্ধার করে প্রথমে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হয় তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মিঠুন বলেন, তাঁর মামা মারা গেছেন। সেই জানাজা নিয়ে তাঁরা ব্যস্ত আছেন। যাঁরা অলিউজ্জামানকে মারধরের অভিযোগ করেছেন তাঁরা মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। তিনি দাবি করেন আহসান, সীমান্তও ঘটনাস্থলে ছিল না।

পাল্টা অভিযোগ করে মিঠুন বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময় তাঁর পরিবারে দুইটা খুন হয়েছে। তাঁরা বিপদগ্রস্ত আছেন। তাঁরা রাজনীতি করতে পারেননি। তা ছাড়া নিয়োগ–বাণিজ্যের কারণে এই মন্টু মাস্টারের (অলিউজ্জামান) নাম পড়েছিল ‘পুঠিয়া–দুর্গাপুরের শিক্ষামন্ত্রী’।

পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কবির হোসেন জানান, এ ঘটনায় তাঁদের কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। তাঁরা মৌখিকভাবে শুনেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। তিনি আহত হয়েছেন, তাঁকে প্রথমে পুঠিয়া হাসপাতালে পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কারা অলিউজ্জামানের ওপর হামলা চালিয়েছে জানতে চাইলে ওসি বলেন, কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।