ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মালবাহী ট্রেনের লাইনচ্যুতির ঘটনায় তদন্ত কমিটি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার দারিয়াপুর এলাকায় কনটেইনার বহনকারী মালবাহী ট্রেনের সাতটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ শুক্রবার এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
ঢাকায় কর্মরত বাংলাদেশ রেলওয়ের সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা মো. আমিনুল হক মুঠোফোনে শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, মালবাহী ট্রেনের সাতটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. খাইরুল কবিরকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বাংলাদেশ রেলওয়ে ঢাকার বিভাগীয় সংকেত প্রকৌশলী মো. সৌমাক শাওন, বিভাগীয় প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম, বিভাগীয় প্রকৌশলী ঢাকা-২ সিরাজ জিন্নাত ও বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী মো. রাসেল।
চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকা অভিমুখী কনটেইনার বহনকারী ট্রেনটি গতকাল দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার দারিয়াপুর এলাকায় পৌঁছালে সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে চট্টগ্রাম ও সিলেটের সঙ্গে ঢাকা অভিমুখী রেলপথে (আপ লাইন) ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে পাশে থাকা ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেট অভিমুখী রেলপথ (ডাউন লাইন) দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকে।
এদিকে আজ শুক্রবার বিকেল পৌনে পাঁচটা পর্যন্ত ছয়টি বগি উদ্ধার করা হয়েছে। আখাউড়া রেলওয়ে জংশনের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, লাইনচ্যুত হওয়া সাতটির মধ্যে ছয়টি বগি উদ্ধার করা হয়েছে। আরেকটি বগি উদ্ধারের কাজ চলছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের ভারপ্রাপ্ত মাস্টার রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কনটেইনারবাহী ট্রেনের সাতটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় ৫০০ মিটার রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অতিরিক্ত তাপমাত্রা ও চলন্ত রেললাইনের সঙ্গে ট্রেনের চাকার ঘর্ষণের ফলে লাইন বেঁকে যাওয়ায় বগি লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ৫০০-৬০০ স্লিপার ভেঙে গেছে। বেঁকে গেছে লাইন।
আখাউড়া রেলওয়ে জংশনের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রার পরিমাণ বেড়েই চলেছে। স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে রেললাইনে তাপমাত্রার পরিমাণ সব সময়ই বেশি থাকে। এ কারণে গতি কমিয়ে ট্রেন চলাচলের নির্দেশনা দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ১১ এপ্রিল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রেলপথে এ রকম নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গতি কমিয়ে ট্রেন চলাচল করছে। যত দিন তাপমাত্রা বেশি থাকবে, এই নির্দেশনা কার্যকর থাকবে। তাপমাত্রার তীব্রতার কারণে রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অংশে সব আন্তনগর ও লোকাল ট্রেনকে সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটার গতিতে চালাতে লোকোমাস্টারদের নির্দেশনা দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। আর মালবাহী ট্রেনগুলোকে ৩০ কিলোমিটার গতিতে চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়।