দিনাজপুরের খানসামায় নতুন বইয়ের সঙ্গে নৌকার লিফলেট
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় বছরের প্রথম দিন নতুন বই নিতে আসা খুদে শিক্ষার্থীদের বইয়ের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে উপজেলার হোসেনপুর উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর পক্ষে ভোট চেয়ে লিফলেটটি বিতরণ করেছেন পাশের হোসেনপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোনায়েম খান। আজ মঙ্গলবার অধ্যক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
বই বিতরণ শেষে ওই অধ্যক্ষ তাঁর নিজ ফেসবুক আইডিতে কয়েকটি ছবি ও বক্তব্যের ভিডিও পোস্ট করলে সেটি অভিভাবকদের নজরে আসে। তাঁরা বিষয়টির সমালোচনা করেন। অধ্যক্ষ ভিডিও বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের বাড়ির পাশে মন্ত্রী মহোদয়ের (আবুল হাসান মাহমুদ আলী, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী) বাড়ি। তিনি আবারও দাঁড়িয়েছেন। তোমরা যদিও ভোটার না, তারপরও কিছু পোস্টার তোমাদের দেব। প্রত্যেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাবা-মাকে বলবে, উনাকে ভোট দিলে উনি আবার এমপি (সংসদ সদস্য) হবেন, মন্ত্রী হবেন। আমাদের যে প্রতিষ্ঠানগুলো পিছিয়ে আছে, ভবন নেই, স্কুল-মাদ্রাসা ও কলেজে ভবন নেই; উনি এমপি হলে এবার এই বিল্ডিংগুলো করে দেবেন। উনি ছবিটা দেখে খুশি হবেন যে বই দেওয়ার পাশাপাশি উনার পোস্টার দিয়েছি। ৭ তারিখে উনার ভোট। তোমাদের বাবা-মাকে বলবা, আমাদের একজন এমপি দাঁড়াইছে। স্যার বলছে, ভোটটা দিতে।’
বই বিতরণ উৎসবে ভোটার হয়নি এমন শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ ধরনের প্রচার চালাতে পারেন কি না জানতে চাইলে অধ্যক্ষ মোনায়েম খান বলেন, ‘আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়টি মাথায় আসেনি। বই বিতরণ উৎসবে এসে কাজটি করে ফেলেছি। অজান্তেই কাজটি করার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। পরবর্তী সময়ে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকব।’
এ বিষয়ে হোসেনপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বই বিতরণ উৎসবে অধ্যক্ষ মহোদয়কে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। তিনি নিজে থেকেই এসে বক্তব্য দেওয়ার অনুরোধ জানালে তাঁকে সুযোগ দেওয়া হয়। রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে তাঁকে নিষেধও করেছিলাম। তিনি সচেতন মানুষ হওয়া সত্ত্বেও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে লিফলেট ও ভোট চেয়ে বক্তব্য দিলেন। আমরা কল্পনা করতে পারিনি যে তিনি এ কাজ করবেন। কাজটা তিনি মোটেও ঠিক করেননি।’
এ বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তাজ উদ্দিন বলেন, বই উৎসবে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি আচরণবিধির মধ্যে পড়ে। ওই শিক্ষককে ইতিমধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে সেটির জবাব দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।