নারায়ণগঞ্জের ছাদবাগানে ‘মরুর গোলাপ’ এডোনিয়াম
গ্রীষ্মকালের এই গরমে নারায়ণগঞ্জের ছাদবাগানগুলোয় ফুটেছে মরুর গোলাপ নামে খ্যাত এডোনিয়াম ফুল। সাদা, হলুদ, গোলাপি, কমলা, মেরুন, বেগুনি, কালোসহ নানা রঙের এডোনিয়াম ফুল ফুটেছে। এগুলোর সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ সবাই।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের নিমাই কাঁসারী এলাকায় ‘বৃক্ষ কুঞ্জ’ নামের পাঁচতলা বাড়ির ছাদে চিকিৎসক দম্পতি মাহফুজা আক্তার ও ফয়েজ আহমেদ ছাদবাগান করেছেন। তাঁদের ১ হাজার ৮০০ বর্গফুট বাড়ির ছাদে বিভিন্ন প্রজাতির ৪০টির বেশি রঙের এডোনিয়াম ফুল ফুটেছে। তাঁদের ছাদে বিরল প্রজাতির নাগলিঙ্গম, বৈচি, হিজল, তমাল, অশোক, বাবলা, ছাতিম, পলাশ, শিমুলসহ দুই হাজারের বেশি বনসাই আছে।
মাহফুজা আক্তার বলেন, গরম যত পড়বে, গাছগুলো তত ফুলে ফুলে ভরে থাকবে। মোটামুটি সারা বছর এই ফুল থাকে। তবে শীতকালে গাছগুলো সুপ্ত অবস্থায় চলে যায়। সব পাতা ঝরে যায়। বৃষ্টি ও অধিক পানিতে ফুলগুলো নষ্ট হয়ে যায়।
গত মার্চ থেকে এডোনিয়ামগাছগুলোয় রিপোর্ট ও পুলিং করা হয়েছে, এ কারণে এবার প্রচুর ফুল এসেছে বলে জানান ফয়েজ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমে যখন মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা, তখন আমাদের ছাদবাগানের কারণে বাড়ি শীতল থাকছে। বাড়িতে একটুও গরম বোধ হচ্ছে না। আমাদের দেশের আবহাওয়ার সঙ্গে এডোনিয়াম ভালোভাবে মিশে গেছে। এ কারণে প্রচণ্ড গরমে গাছগুলোয় প্রচুর এডোনিয়াম ফুটেছে।’
ভাড়া বাড়িতে ছাদবাগানে দুই শতাধিক এডোনিয়ামগাছ লাগিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ কলেজের প্রভাষক ফারজানা আফরোজ ও তাঁর স্বামী ব্যবসায়ী মেহেবুবুল হক। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার দক্ষিণ সস্তাপুর এলাকায় তাঁদের বাড়ি। এই দম্পতি তিন বছর ধরে দেড় হাজার বর্গফুটের ছাদবাগানে বিভিন্ন প্রজাতির এডোনিয়ামগাছ লাগিয়েছেন।
ফারজানা আফরোজ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের ছাদবাগানে প্রচুর এডোনিয়ামের ফুল ফুটেছে। অবসর সময়গুলো সুন্দর কেটে যায়। তাঁদের ছাদবাগান অনেকেই দেখতে আসেন।
নারায়ণগঞ্জ শহরের মাসদাইর পতেঙ্গা মোড় এলাকার ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন ও ইভা আক্তার দম্পতির ছাদবাগানে দুই শতাধিক এডোনিয়াম ফুল ফুটেছে। তাঁদের ছাদবাগানে চার হাজারের বেশি গাছ আছে।
জামাল উদ্দিন বলেন, এ সময়টায় এডোনিয়াম, কাঠগোলাপ ও কাঁটামুকুট প্রচুর ফুটেছে। এসব ফুল দেখতে সুন্দর লাগে। গরম বেশি পড়ায় গাছগুলোয় অন্য সময়ের তুলনায় প্রচুর ফুল ফুটেছে।
জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে প্রচুর গরম পড়ছে। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে হলে বেশি করে গাছ লাগাতে হবে বলে মত নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তাজুল ইসলামের। তিনি বলেন, জায়গা না থাকলে বাড়ির ছাদগুলোয় গাছ লাগানো যেতে পারে। ফল, ফুলসহ বিভিন্ন ধরনের গাছ লাগানো যেতে পারে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে।