গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ছয় মেয়র প্রার্থী জামানত হারাচ্ছেন। সিটি নির্বাচনের বিধি অনুযায়ী, মোট প্রদত্ত ভোটের সাড়ে ১২ শতাংশের কম ভোট পাওয়ায় ছয়জন মেয়র প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে।
ওই ছয় মেয়র প্রার্থী হলেন—জাতীয় পার্টির এম এম নিয়াজ উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম, জাকের পার্টির রাজু আহমেদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম ও হারুন অর রশিদ।
তাঁদের জামানত হারানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এ এইচ এন কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচনে জামানত হারানো এড়াতে হলে একজন প্রার্থীকে প্রদত্ত ভোটের সাড়ে ১২ শতাংশ ভোট পেতে হয়। ছয় মেয়র প্রার্থী প্রদত্ত ভোটের সাড়ে ১২ শতাংশের কম ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘যে ভোট কাস্টিং হয়েছে, সেই ভোটের আট ভাগের এক ভাগ ভোট অন্তত একজন প্রার্থীর পেতে হবে; তা না হলে ওই প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।’
মেয়র পদে আট প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ভোটে স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন টেবিলঘড়ি মার্কায় ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটের ব্যবধানে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে পরাজিত করে মেয়র হন। জায়েদা খাতুন পান ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা পান ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
এবার গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৫৭৬ জন। সিটির ৫৭টি ওয়ার্ডে ৪৮০টি ভোটকেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৫০টি। এর মধ্যে ভোট বাতিল হয়েছে ১ হাজার ৭৯৪টি। বৈধ ভোট ৫ লাখ ৭৩ হাজার ২৫৬। শতকরা হিসাবে ভোট পড়েছে ৪৮ দশমিক ৭৬।
জামানত হারাতে বসা ছয় প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন হাতপাখা প্রতীকের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান। তিনি ভোট পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৩৫২ ভোট। তাঁর পরের অবস্থানে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম, তিনি পেয়েছেন ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট।
এ ছাড়া গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম পেয়েছেন ১৬ হাজার ৯৭৬ ভোট। জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন পেয়েছেন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট। গোলাপ ফুল প্রতীকের জাকের পার্টির প্রার্থী রাজু আহমেদ পেয়েছেন ৭ হাজার ২০৬ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী হারুন অর রশিদ ভোট পেয়েছেন ২ হাজার ৪২৬।
জামানত হারানো প্রসঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহনুর ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচনে আমার এজেন্টদের জোর করে বের করে দেওয়া হয়েছে। সরকারদলীয় নেতা–কর্মীরা আমাদের প্রচার–প্রচারণায় বাধা সৃষ্টি করেছেন। যার কারণে ভোট কম পেয়েছি।’
ইভিএমের কারণে ভোট কম পেয়েছেন বলে দাবি করেন গোলাপ ফুল প্রতীকের জাকের পার্টির প্রার্থী রাজু আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ ইভিএম মেশিনে ভোট দিতে গিয়ে অনেকে বিড়ম্বনার শিকার হয়েছে। তারা ভালো করে ভোট দেওয়া শিখতে পারেনি।’ এ ছাড়া গণফ্রন্টের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম বলেন, ভোটের পরিবেশ ভালো ছিল। তবে কেন এত কম ভোট পেয়েছেন, সেটি তিনি খতিয়ে দেখছেন বলে জানান।