দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নারীর লাশ ফেলে পালিয়ে যান সাবেক স্বামী

লাশ উদ্ধার
প্রতীকী ছবি

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফারিয়া আক্তার ওরফে হাজেরা (২৪) নামের এক নারীর লাশ ফেলে তাঁর সাবেক স্বামী মজিবুর রহমান পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নারীর স্বজনেরা এ অভিযোগ করেন। সেই সঙ্গে তাঁরা দাবি করেন, ওই নারীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত ফারিয়া আক্তার দাউদকান্দি উপজেলার ভুলিরপাড় গ্রামের মজিবুর রহমানের স্ত্রী ছিলেন। নিহত নারীর বাবার বাড়ি দাউদকান্দি উপজেলার পালপাড়া গ্রামে।

নিহত ফারিয়ার বাবা কৃষক মজু মিয়া বলেন, পাঁচ বছর আগে ভুলিরপাড় গ্রামের মজিবুর রহমানের সঙ্গে তাঁর মেয়ে ফারিয়া আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাঁদের ঘরে এক কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকেই মজিবুর রহমান এবং তাঁর মা যৌতুকের দাবিতে ফারিয়াকে বেদম মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে মজিবুর রহমান গোপনে দ্বিতীয় বিয়েও করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে প্রায় দেড় মাস আগে ফারিয়া ও মজিবুরের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। কিছুদিন আগে জোর করে ফারিয়াকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান মজিবুর। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে ফারিয়াকে পিটিয়ে হত্যা করেন মজিবুর। পরে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফারিয়ার লাশ রেখে মজিবুর পালিয়ে যান।

ঘটনার পর মজু মিয়াকে মুঠোফোনে ফোন করে মজিবুর রহমান বলেন, তাঁর মেয়ে ফারিয়া ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন। লাশ দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছে।

এমন খবর পেয়ে মা–বাবাসহ স্বজনেরা দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে ফারিয়ার লাশ দেখতে পান। সেই সঙ্গে তাঁর গলায়, পায়ে ও মুখে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়েছেন তাঁরা। অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে মজিবুর রহমানের মুঠোফোনে ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাকিব আবরার বলেন, ফারিয়াকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। নিহত নারীর গলায় ও শরীরের অন্যান্য স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

দাউদকান্দি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুনায়েত চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদনে নিহত নারীর গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। তবে এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।