২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ভোটকেন্দ্রে না গেলে ভাতা বন্ধের হুমকি দিয়ে ক্ষমা চাইলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী

জিয়াউল হক মোল্লা

‘এবারের নির্বাচনে যাঁরা ভোটকেন্দ্রে যাবেন না, তাঁদের জন্য সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা হয়ে যাবে’, নির্বাচনী সভায় এমন বক্তব্য দিয়েছিলেন বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপিদলীয় সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মোল্লা।

মঙ্গলবার কাহালুর ভালশন বাজারে এক নির্বাচনী সভায় তিনি বক্তব্য দেন। তাঁর বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। পরে ক্ষমা চেয়েছেন ওই প্রার্থী।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে জিয়াউল হক মোল্লাকে বলতে শোনা যায়, ‘এবার যাঁরা ভোট দিতে যাবেন না, তাঁদের জন্য সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা বন্ধ থাকবে।’ কী কী সুবিধা বন্ধ হবে, তা-ও স্পষ্ট করেন জিয়াউল হক। বক্তব্যের একটি অংশে বলেন, ‘কী কী সরকারি সুযোগ-সুবিধা? ভিজিডি, ভিজিএফ, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা বিভিন্ন ভাতা আছে। সরকার এগুলো তালিকাভুক্ত করবে এবং (যাঁরা ভোট দিতে যাবেন না) তাঁরা এসব সুযোগ-সুবিধা থেকে ভবিষ্যতে বঞ্চিত হবেন।’

জিয়াউল হোক মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভিডিওর বক্তব্য আমিই দিয়েছি। কোনো একটি অনলাইনে একটা ফেক নিউজ দেখে সেটা সঠিক ভেবে এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছি। ফেক নিউজ দেখে আমি মনে করেছিলাম, ভোট দিতে কেউ কেন্দ্রে না গেলে সরকার ভাতা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে বুঝতে পেরেছি, সেটি ফেক নিউজ। ভুল বুঝতে পেরে ফেসবুকে ক্ষমাও চেয়েছি।’

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি নিজের ফেসবুকে শেয়ার করে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন একই আসনের বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, একজন প্রার্থী ভোটারদের কাছে শুধু ভোট চাইতে পারেন। কিন্তু কোনো ধরনের হুমকি বা চাপ দিতে পারেন না। ভোটাররা কেন্দ্রে যাবেন কি না, তা তাঁদের নিজস্ব ব্যাপার। কাউকে চাপ দিয়ে কেন্দ্রে আনা বেআইনি। ওই হুমকি দিয়ে জিয়াউল হক মোল্লা আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে।

জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো প্রার্থী এমন মিথ্যাচারের আশ্রয় নিলে তা নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি দেখবে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে অনুসন্ধান কমিটির নজরে আনা হবে।

জিয়াউল হক মোল্লা ১৯৯৩ সালে উপনির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে প্রথম সংসদ সদস্য হন। পরে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনেও বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৭ সালে এক-এগারোর সেনাসমর্থিত সরকার ক্ষমতায় এলে তিনি ‘সংস্কারপন্থী’ হিসেবে পরিচিতি পান। ২০০৮ সালে তাঁকে বাদ দিয়ে মোস্তফা আলীকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। ২০১৮ সালে দলের খসড়া মনোনয়নের তালিকায় তাঁর নাম থাকলেও শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পাননি।