আখাউড়া ইমিগ্রেশনে সার্ভারে ত্রুটি, যাত্রী পারাপারে ধীরগতি

সার্ভারে ত্রুটির কারণে যাত্রী পারাপারে ধীরগতির কারণে দীর্ঘক্ষণ সারিতে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে যাত্রীদের। বুধবার বিকেলে আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট কার্যালয়ের সামনেছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্টের সার্ভারে ত্রুটির কারণে যাত্রী পারাপারে ধীরগতি দেখা গেছে। অনলাইনে একজন যাত্রীর তথ্য যাচাইয়ে যেখানে ১ মিনিট সময় লাগার কথা, সার্ভারের সমস্যায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট লেগেছে। দীর্ঘক্ষণ সারিতে দাঁড়িয়ে ভোগান্তিতে পড়েন কয়েক শ যাত্রী। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন নারী-শিশুসহ চিকিৎসার জন্য ভারতে যাতায়াতকারী রোগীরা।

বুধবার সকাল থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত সার্ভারে ত্রুটি দেখা যায়। ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট পুলিশ বলছে, যাত্রীর চাপ বাড়ায় সার্ভারে ত্রুটি দেখা দেয়। চারটার পর থেকে সার্ভার স্বাভাবিক হয়েছে। বর্তমানে যাত্রীর কোনো চাপ নেই।

ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়া ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্ট কার্যালয়ে তিনটি কম্পিউটার ডেস্ক আছে। এর মধ্যে দুটি ডেস্কে বহির্গমন ও একটিতে আগমনী যাত্রীদের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। আজ সকাল থেকেই চেকপোস্টে যাত্রীদের চাপ বাড়ে। যাত্রী বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সার্ভারে ত্রুটি দেখা দেয়। এতে একজন যাত্রীর ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে ১৫-২০ মিনিট সময় লেগে যায়। যদিও সার্ভার ঠিক থাকলে একজন যাত্রীর ইমিগ্রেশনের তথ্য যাচাইয়ে মাত্র ১ মিনিট সময় লাগে।

আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ইনচার্জ পরিদর্শক হাসান আহমেদ ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, বিকেল চারটা পর্যন্ত সার্ভারে ত্রুটি ছিল। চারটার পর সার্ভার স্বাভাবিক হয়। সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত ১ হাজার যাত্রী ভারতে গেছেন। বর্তমানে যাত্রীর কোনো চাপ নেই। তিনি বলেন, অনেক দিন ধরেই সার্ভারে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। এখানে সার্ভার স্থাপনের সময় যাত্রী পারাপার খুবই সীমিত ছিল। সব মিলিয়ে দিনে ১০০ থেকে ২০০ যাত্রী যাতায়াত করতেন। কিন্তু এখন দেড় থেকে দুই হাজারের বেশি যাত্রী আসা-যাওয়া করে। সার্ভারের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য চিঠি দিয়েছেন।

এদিকে সার্ভারে ধীরগতির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। ইমিগ্রেশন এলাকাটি ছোট হওয়ায় বসার পর্যাপ্ত জায়গাও নেই। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন রোগী, শিশু ও বয়স্ক যাত্রীরা। অসুস্থ মায়ের চিকিৎসায় ভারতে যেতে আখাউড়া ইমিগ্রেশনে আসেন মৌলভীবাজারের মো. মহসিন আলী। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি বলেন, ‘আমার বৃদ্ধ মাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছি। সকাল থেকে প্রায় ২ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। কচ্ছপ গতিতে কাজ হচ্ছে। মা অসুস্থ। এখানে বসার পরিবেশ না থাকায় মাকে নিয়ে কষ্ট করতে হচ্ছে।’

বসার জায়গা না থাকায় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে পড়েন যাত্রীদের কেউ কেউ। বুধবার দুপুরে আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট কার্যালয়ের সামনে
ছবি: সংগৃহীত

স্বামী-সন্তানকে নিয়ে প্রথমবার আখাউড়া হয়ে ভারতে ঘুরতে যাচ্ছেন। আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রথমবার ভারতে যাচ্ছেন। ঈষিতা দেব রায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টায় ইমিগ্রেশনে এসে সার্ভারে ধীরগতির কারণে বিড়ম্বনায় পড়েছি। দেশ উন্নত হয়েছে। কিন্তু এই দিকে সরকারের নজর দেওয়া উচিত। প্রযুক্তি আরও আপডেট হওয়া প্রয়োজন। ইমিগ্রেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গার পরিবেশ আরও উন্নত হওয়া উচিত।’