ভারী বৃষ্টিতে পাহাড়ধসের শঙ্কা, সেখানেই কাটা হচ্ছে পাহাড়
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ভারী বৃষ্টির মধ্যে পাহাড়ধসের আশঙ্কায় দিন কাটছে বাসিন্দাদের। এরই মধ্যে চলছে পাহাড় কাটা। এ কারণে পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি দুর্ঘটনায় প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন। উপজেলা প্রশাসন বলছে, যাঁরা পাহাড় কাটছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অভিযান চালানো হবে।
গতকাল বুধবার সরেজমিন উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ও ইসলামপুর ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর মসজিদ ভিটা এলাকায় মো. আবছার নামের এক ব্যক্তির কাঁচা ঘরের পেছনে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাহাড় কেটে সাবাড় করেছে দুর্বৃত্তরা। পাহাড় লাগোয়া মাটির ঘরটি যেকোনো সময় পাহাড়ধসে ভেঙে পড়তে পারে বলে জানান বাসিন্দারা।
ইসলামপুর ইউনিয়নের খলিফাপাড়া এলাকায় সড়কের পাশে বিশালাকার পাহাড় কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। পাহাড়ের ওপরে থাকা গাছপালার পাশে কয়েকটি কাঁচা ঘর রয়েছে। যেকোনো সময় পাহাড় ধসে পড়ে বসতঘরসহ সড়কে চলাচলরত মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। একই দৃশ্য দেখা যায় দুই ইউনিয়নের একাধিক পাহাড়ে। তবে পাহাড় নিধনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁদের ভয়ে কেউ মুখ খুলছেন না।
উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে ১৫ হাজার একর বনভূমি বা পাহাড় রয়েছে। যেখানে ঝুঁকি নিয়ে থাকছেন প্রায় ১০ হাজার পরিবারের অন্তত অর্ধলক্ষ বাসিন্দা। পাহাড়ধসের আশঙ্কায় ঝুঁকিপূর্ণ বসতি থেকে লোকজনকে সরে যেতে বলছেন উপজেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিস। তবে নেই দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ। অন্যদিকে নিম্ন আয়ের এসব মানুষ অনেকটা বাধ্য হয়েই পাহাড়ে পরিবার নিয়ে থাকছেন। আবার এসব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাতেই চলছে পাহাড় নিধন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইসলামপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘সড়কের পাশে ও কবরস্থানের জন্য নির্ধারিত স্থানে পাহাড় কারা কাটছে খবর নেব। প্রয়োজনে প্রশাসনকে জানানো হবে।’
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৩ জুন উপজেলার ইসলামপুর ও দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নে পাহাড়ধসে মাটি চাপায় মারা গিয়েছিল ২৩ জন। এরপরও সারা বছর ধরে বেপরোয়াভাবে কাটা হচ্ছে পাহাড়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান মেহবুব প্রথম আলোকে বলেন, পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য বারবার বলা হচ্ছে। যাঁরা পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত, খবর নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।