যশোরে সংঘর্ষে পণ্ড হলো একই স্থানে বিএনপির দুই পক্ষের সমাবেশ

যশোরের শার্শা উপজেলায় গোড়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বিএনপির দুই পক্ষের সমাবেশ ছিল। আজ দুপুরে সংঘর্ষে সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়ছবি: প্রথম আলো

যশোরের শার্শা উপজেলায় বিএনপির দুই পক্ষের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে। আজ মঙ্গলবার শার্শা উপজেলার গোড়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বেলা তিনটায় দুই পক্ষের সমাবেশ ছিল। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে সমাবেশ পণ্ড হয়ে গেছে।

সংঘর্ষে তিনজন আহত হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এ সময় কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।

দলের নেতারা জানান, শার্শা উপজেলায় বিএনপির মধ্যে দুটি পক্ষ রয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান এক পক্ষ ও উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাসান জহির অপর পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে অভ্যন্তরীণ কোন্দল চলছে।

আজ দুই পক্ষ একই স্থানে একই সময়ে সমাবেশ ডাকে। মফিকুল হাসানের পক্ষের লোকজন উপজেলা বিএনপির ব্যানারে সমাবেশ করার জন্য সকাল থেকে গোড়পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মঞ্চ নির্মাণ করে চেয়ার বসিয়ে রাখেন। এদিকে জহিরের পক্ষের লোকজন কৃষক দলের ব্যানারে সমাবেশের প্রস্তুতি নিতে আজ দুপুরে ওই বিদ্যালয়ের মাঠে যান। এ সময় মফিকুলের পক্ষের এক কর্মী তাঁদের বাধা দিলে জহিরের পক্ষের লোকজন উত্তেজিত হয়ে তাঁদেরকে ধাওয়া দেন। এ সময় মঞ্চ ও চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। এতে তিনজন আহত হন। আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

মফিকুল হাসানের অনুসারী শার্শা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল হক বলেন, ‘আমরা পুলিশের অনুমতি নিয়ে সমাবেশের মঞ্চ নির্মাণ করে চেয়ার বসিয়ে রাখি। আমাদের সমাবেশ পণ্ড করতে হাসান জহিরের লোকজন হামলা করে আমাদের মঞ্চ ও চেয়ার ভাঙচুর করেন। এ সময় তাঁরা ৮ থেকে ১০টি বোমার বিস্ফোরণ ঘটান। তাঁদের হামলায় আমিসহ আমাদের তিনজন আহত হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাসান জহিরকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি। তবে সভাপতি খায়রুজ্জামান মধু বলেন, ‘আমি গতকাল সোমবার ঢাকায় চলে এসেছি। গতকাল শুনেছিলাম, দুই পক্ষ একই জায়গায় একই সময়ে সমাবেশের উদ্যোগ নিয়েছে। তখন উভয় পক্ষের সমাবেশ বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছিলাম। বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে, কিন্তু তারা আমার পরামর্শ শোনেনি।’
খায়রুজ্জামান মধু বলেন, ‘বিএনপির ব্যানারে মফিকুল হাসান সমাবেশের উদ্যোগ নেন। আমি দলের সভাপতি অথচ আমাকে ওই সমাবেশে থাকার জন্য কেউ বলেননি।’
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য মফিকুল হাসানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাড়া দেননি।

সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির আব্বাস বলেন, ‘শার্শায় মফিকুল ও হাসান জহিরের নেতৃত্বে দুটি পক্ষ রয়েছে। দুই পক্ষ একই সময়ে একই জায়গায় সমাবেশ ডাকে। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় কেউ মামলা দিলে নেওয়া হবে।’

ওসি বলেন, ‘শুনেছি, দলের কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, কোনো পক্ষ সমাবেশ করতে পারবে না।’