জিপিএ-৫ পেয়েছেন মিজানুর, কিন্তু পরীক্ষার ফল জানতে পারলেন না

মিজানুর রহমান এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ–৫ পেয়েছেন। কিন্তু তিনি এই ফল জানতে পারেননি; আর জানতেও পারবেন না। এর আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।  

যখন এইচএসসির ফলাফল প্রকাশিত হয়, তখন মিজানুর রহমান সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালের শয্যায় অচেতন ছিলেন। পাঁচ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তিনি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেছেন। তাঁর মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন জয়পুরহাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আসাদুজ্জামান।

মিজানুর রহমান (১৯) বগুড়ার শাজাহানপুর ফুলদীঘি মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে। জয়পুরহাট সদর উপজেলার ধলাহার ইউনিয়নের জামতলী গ্রামে তাঁর নানার বাড়ি। তিনি তাঁর মা তানজিলা আক্তারকে নিয়ে জয়পুরহাট শহরের মাস্টারপাড়া মহল্লায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। তাঁর মা স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকরি করেন। মিজানুর জয়পুরহাট সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিজানুর ১২ অক্টোবর জয়পুরহাট শহর থেকে মঙ্গলবাড়ি বাজারে যাচ্ছিল। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিমুলতলী এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশার সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এতে মিজানুর মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার  জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তিনি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাত আটটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।

নিহত মিজানুরের বন্ধু বিজয় হাসান বলেন, ‘সে (মিজানুর) আমাদের খুব ভালো বন্ধু ছিল। সেবামূলক বিভিন্ন কাজে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে থাকত। পরীক্ষার ভালো ফল করেছে, তা–ও জানতে পারেনি। মিজানুরের অনেক স্বপ্ন ছিল। সড়ক দুর্ঘটনায় অকালমৃত্যুতে তার স্বপ্নগুলো অধরা থেকে গেল। মিজানুরের এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না।’