দিনে ৪ ঘণ্টা লোডশেডিং, ভোগান্তিতে লাখ মানুষ
নেসকোর অধীন এলাকায় ২৪ ঘণ্টায় গড়ে বিদ্যুতের চাহিদা ১০৫ মেগাওয়াট।
কিন্তু জাতীয় গ্রিড থেকে মাত্র ৭০–৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।
বগুড়ায় কয়েক দিন ধরে লোডশেডিং বেড়েছে। গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লোডশেডিং বাড়ায় ভোগান্তি পোহাচ্ছে মানুষ। ইফতার ও সাহ্রির সময়ও অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ থাকছে না। বিদ্যুৎ–বিভ্রাটের কারণে ঈদের বাজারেও বেচাকেনা ব্যাহত হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ না পাওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। তাঁরা বলেন, চাহিদার তুলনায় প্রতিদিন ২০–৩০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি থাকছে। গরমের সঙ্গে পবিত্র রমজান মাস ও ঈদের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে।
বগুড়ায় চাহিদার তুলনায় প্রতিদিন ২০–৩০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি থাকছে। এ কারণে লোডশেডিং বেড়ে গেছে।
শহরের রাজাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল প্রসাদ রাজ বলেন, ঈদের বাজার জমে উঠেছে। গভীর রাত পর্যন্ত মানুষের কেনাকাটা চলছে। কিন্ত বিদ্যুৎ–বিভ্রাটের কারণে ব্যবসায়ীরা ঠিকমতো বেচাবিক্রি করতে পারছেন না। এতে আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।
শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী ফজলে রাব্বী বলেন, রেস্তোরাঁর রেফ্রিজারেটরে নানা কাঁচামাল থাকে। দিনে–রাতে ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিং চলছে। গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লোডশেডিং বেড়েছে। এতে ফ্রিজে রাখা খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
জলেশ্বরীতলা এলাকার একটি পোশাক বিক্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মৌসুমী আক্তার বলেন, ঈদুল ফিতরের আর বেশি দিন বাকি নেই। ইফতারের পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বেচাবিক্রি জমে ওঠে। কিন্ত বিদ্যুতের ভেলকিবাজির কারণে দিনে–রাতে লোডশেডিং হচ্ছে। এতে ব্যবসায় মন্দাভাব বিরাজ করছে।
নেসকো বগুড়া সূত্রে জানা যায়, গ্রাহকসেবার সুবিধার্থে বগুড়া শহরকে বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১, ২, ৩ ও ৪ অঞ্চলে ভাগ করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে সংস্থাটি। শহর ছাড়াও দুপচাঁচিয়া, শেরপুর ও শিবগঞ্জ উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে নেসকো। এই চার অঞ্চলে গড়ে মোট বিদ্যুতের চাহিদা ১০৫ মেগাওয়াট। বিপরীতে জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ মিলছে ৭০–৮০ মেগাওয়াট পর্যন্ত। চাহিদার তুলনায় ৩০ শতাংশ সরবরাহে ঘাটতি থাকায় প্রতিদিন চার ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে। শহরের পাশাপাশি গ্রামেও চলছে লোডশেডিং। দিন-রাতে ২৪ ঘণ্টায় গড়ে ২–৩ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে।
এ ছাড়া বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর অধীন সারিয়াকান্দি, ধুনট, গাবতলী, শাজাহানপুর ও শেরপুর উপজেলায় ৪ লাখ ৪০ হাজার গ্রাহক আছেন। জেলার অন্য উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ে থাকে বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ থেকে।
বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২–এর জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক আমজাদ হোসেন বলেন, এখন গড়ে এই অঞ্চলে বিদ্যুতের চাহিদা ৮০ মেগাওয়াট, সরবরাহ মিলছে ৬৫–৭০ মেগাওয়াট। ২৪ ঘণ্টায় বিদ্যুতের ঘাটতি থাকছে গড়ে ১৫ মেগাওয়াট। এর ফলে চাহিদানুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ না পাওয়ায় দিন-রাতের ১৫ শতাংশ সময় লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১–এর মহাব্যবস্থাপক মোনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এ অঞ্চলে বিদ্যুৎতের চাহিদা ৮৮ মেগাওয়াট। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ না পাওয়ায় দিন-রাতের ২০–৩০ শতাংশ সময় লোডশেডিং করতে হচ্ছে।