জয়পুরহাটে নারী-পুরুষের সমতা রেখে পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ

জয়পুরহাটে পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাবসহ পুলিশের অন্য কর্মকর্তারা। গতকাল রাতে তোলাছবি: প্রথম আলো

জয়পুরহাটে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নারী-পুরুষের সমতা রেখে মোট ২৬ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন কোটা এবং বাকিরা মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়েছেন বলে জানান পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব।

গতকাল রোববার রাত ১১টার দিকে জেলা পুলিশ লাইনসের ড্রিলসেডে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কোটায় একজনসহ ১৩ জন নারী ও ১৩ জন পুরুষ এ পদে নিয়োগ পেয়েছেন। তাঁদের অধিকাংশই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তাঁরা মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে মাত্র ১২০ টাকায় কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়েছেন বলে দাবি করা হয়।

আরও পড়ুন

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কোটায় চাকরি পেয়েছেন অর্পিতা রানী বর্মণ। তিনি বলেন, ‘আমার পরিবার অসচ্ছল। মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশের চাকরি পাওয়ায় খুবই আনন্দিত লাগছে। আমিই আমাদের গ্রামের প্রথম পুলিশ।’

মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া সদর উপজেলার আমদই পূর্ব সুন্দরপুর গ্রামের রেশমা বেগম বলেন, ‘আমি পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। গরিব ও অসহায় পরিবার হওয়ায় বাবা কৃষিকাজ করেন। আমাদের কোনো জমিজমা নেই। পুলিশের এই চাকরির খবর পেয়ে আমার পরিবার খুবই খুশি হয়েছে। আমি সততার সঙ্গে চাকরি করব।’

মাত্র ১২০ টাকা খরচ করে পুলিশে চাকরি পাবেন, এমনটি ধারণাতেই ছিল না রোভার স্কাউটসের সদস্য শাহিদ হোসেনের। তিনিও মেধায় চাকরি পেয়েছেন। আনন্দ প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ি চকজগদীশপুর গ্রামে। বাবা ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান। পাশাপাশি আমার পড়ালেখার খরচ দেন। পুলিশে চাকরি পাব, এমনটি ধারণাতেই ছিল না। ফলাফল ঘোষণায় যখন আমার নাম বলল, তখন আনন্দে নিজেকে ধরে রাখতে পারছিলাম না।’

পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব জানান, জেলাটিতে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে মোট ২ হাজার ৭৩৪ জন আবেদন করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ২৬ জন চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হন। এটিই মনে হয় প্রথম, যেখানে সমানসংখ্যক ছেলে-মেয়ে সুযোগ পেয়েছেন। সেখানে কোনো বৈষম্য রাখা হয়নি। নিয়োগপ্রক্রিয়া স্বচ্ছতার মধ্যে হয়েছে বলে দাবি তাঁর।