জাবিতে মুঠোফোন চোর সন্দেহে হোটেল কর্মচারীকে হলে আটকে রেখে মারধরের অভিযোগ
মুঠোফোন চুরির অভিযোগ তুলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন একটি খাবার হোটেলের কর্মচারীকে আবাসিক হলে আটকে রেখে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী আজ মঙ্গলবার সকালে মীর মশাররফ হোসেন হলের ২৬২ নম্বর কক্ষে ভুক্তভোগী সাকিবুল ইসলামকে আটকে রাখেন বলে অভিযোগ। পরে বিকেল পাঁচটার দিকে প্রক্টরিয়াল টিম তাকে উদ্ধার করে।
সাকিবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকার একটি হোটেলের কর্মচারী। অভিযুক্তরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৪৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী কাব্বির হোসেন এবং লোক প্রশাসন বিভাগের ৪৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুল জলিল। তাঁদের সঙ্গে প্রাণ রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের তরিকুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন। কাব্বির ও আব্দুল জলিলের পড়াশোনা শেষ হয়েছে বলে ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে বাংলার স্বাদ হোটেলে খেতে যান কাব্বির হোসেন। খাওয়া শেষে তিনি চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর হোটেলে গিয়ে জানান, তাঁর মুঠোফোন ফেলে গেছেন। তখন দোকানের টেবিল পরিষ্কার করছিলেন সাকিবুল ইসলাম। তাঁকে ডেকে কাব্বির জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং হারানো মুঠোফোন নম্বরে কয়েকবার ফোন দেন। তবে এক পর্যায়ে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে হোটেল থেকে সাকিবুলকে তুলে মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় তাঁকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ।
সাকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুজন ভাই (শিক্ষার্থী) এসে প্রথমে আমাকে মীর মশাররফ হোসেন হলের চত্বরে নিয়ে দুই গালে চড়থাপ্পড় দেয়। পরে আরও একজন এসে তিনজন মিলে আমাকে মারধর করে। একপর্যায়ে আমাকে হলের এক স্যার (হলের ওয়ার্ডেন মাহমুদুর রহমান) এসে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে আমাকে ২৬২ নম্বর রুমে নিয়ে আটকে রাখেন। দুপুরের দিকে হলের ছাদে নিয়ে যার ফোন হারিয়েছে (কাব্বির) সে আমাকে মারধর করে এবং রোদে দাঁড় করিয়ে রাখে।’ পরে বিষয়টি জানাজানি হলে বিকেলে প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে কাব্বির হোসেনের মুঠোফোনে কয়েকবার কল করা হলেও বন্ধ পাওয়া যায়। অন্য অভিযুক্ত আব্দুল জলিলের মুঠোফোনে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। তরিকুল ইসলাম বলেন, তাঁকে মারধর করা হয়েছে কি না, তিনি জানেন না। তাঁর পাশের কক্ষের ভাইয়ের ফোন হারিয়ে গেছে। তাই তিনি গিয়ে ভালোভাবে জিজ্ঞাসা করেন, তিনি ফোন নিয়েছেন কি না। এর বাইরে কিছু করেননি।
মীর মশাররফ হোসেন হলের ওয়ার্ডেন মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘ওই কর্মচারীকে শিক্ষার্থীরা হলের সামনে আনছিল। তখন আমি হলের অফিসে গেলে হোটেল কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। ছাত্রদের বলি, কর্মচারী ফোন নিয়েছে নাকি নেয়নি কোনোটি আমার কাছে স্পষ্ট না। তোমরা থানায় জিডি করো। এটা বলে আমি বিভাগে চলে যাই। পরে দুপুরে জানতে পারি তারা রুমে নিয়ে গেছে।’
এ বিষয়ে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘ঘটনাস্থলে আমরা গিয়েছিলাম। দুই পক্ষকে বলেছি লিখিত অভিযোগ দিতে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেব।’