সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের রেল অবরোধ চলছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও অধিভুক্ত কলেজে শিক্ষার্থীরা আজ বেলা ১১টা ২৫ মিনিট থেকে নগরের দেওয়ানহাট এলাকায় রেললাইন আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা, চাঁদপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, কক্সবাজারের ট্রেন আটকা পড়ে। ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলেও রেলওয়ের কর্মকর্তারা একে সিডিউল বিপর্যয় বলছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরের দেওয়ানহাট এলাকায় রেলপথ দখল করে বিক্ষোভ করছেন কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। এ সময় তাঁরা ‘কোটা প্রথা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’; ‘নাতিপুতি কোটা নির্মূল করো’; ‘পোষ্য কোটার কবর দে’ ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছিলেন।
জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ বলেন, আজ সূর্য ডোবার আগপর্যন্ত তাঁরা রেল অবরোধ রাখবেন। কেউ যদি তাঁদের আন্দোলন অবরোধ প্রত্যাহার করতে বলেন, তাহলে তাঁরা যেন আগে সূর্য ডুবিয়ে আসে। কারণ, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করবেন না।
চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কারণে বেশ কয়েকটি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। সর্বশেষ ঢাকাগামী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেন দুপুর সাড়ে ১২টায় ছাড়ার কথা থাকলেও এখনো স্টেশন ছেড়ে যায়নি। শিক্ষার্থীরা না সরা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করবে না।
ষোলশহর রেলস্টেশনে বিক্ষোভ
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনে নগরে আসেন। নিয়মিত সূচি অনুযায়ী এই ট্রেন ক্যাম্পাস ছাড়ে সকাল ৯টা ২০ মিনিটে। তবে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে এ ট্রেন ছাড়ে ৯টা ৪০ মিনিটে। পরে ১০টা ১৫ মিনিটে সেটি ষোলশহর পৌঁছায়। নিয়মিত সূচিতে ষোলশহর রেলস্টেশন থেকেই ১০টা ৪৫ মিনিটে সেটি ক্যাম্পাসের উদ্দেশে ছেড়ে যেত। তবে শিক্ষার্থীরা ট্রেনটি নগরের দেওয়ানহাট পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার দাবি জানান। তবে রেলওয়ে কর্মকর্তারা সেটি মাননেনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, শাটল ট্রেন দেওয়ানহাট পর্যন্ত নেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থী ষোলশহর স্টেশনমাস্টারের কার্যালয় অবরোধ করেন। শিক্ষার্থীরা রেলওয়ে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বেলা ১১টা ১০ মিনিটে শাটল ট্রেননটি দেওয়ানহাট পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয় রেল কর্তৃপক্ষ।
জানতে চাইলে ষোলশহর স্টেশনমাস্টার মো. জয়নুল আবেদীন প্রথম আলোকে বলেন, ট্রেন দেওয়ান হাট পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার দাবি করছিলেন শিক্ষার্থীরা। কর্তৃপক্ষের নির্দেশ না পাওয়ায় তাঁরা অনুমতি দিতে পারেননি।