কয়রায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষে শিক্ষক নিহত

প্রতীকী ছবি

খুলনার কয়রায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক শিক্ষক নিহত হয়েছেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে গতকাল রোববার রাতে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে গত শুক্রবার (৯ আগস্ট) খুলনা মে‌ডি‌কেল ক‌লেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

ওই ব্যক্তির নাম রেজাউল করিম। তিনি কয়রা ম‌দিনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ‌্যাল‌য়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। ৫ আগস্ট কয়রা সদর ইউনিয়নের রশিদ মোল্লার মোড় এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন তিনি।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সূত্রে জানা গেছে, রেজাউল করিমের সঙ্গে তাঁর চাচাতো ভাইদের জমিসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছিল। গত ৫ আগস্ট বিকেলে রশিদ মোল্লার মোড় এলাকায় চাচাতো ভাই সোহরাব হোসেনের পথরোধ করেন রেজাউল। এ সময় সোহরাবকে উদ্দেশ করে রেজাউল বলেন, ‘এখন শেখ হাসিনার সরকার নেই। আমার নামে মামলা করেছিলি কেন বল?’ এ কথা বলেই সোহরাবকে মারধর করেন রেজাউল। খবর পেয়ে সোহরাবের ভাইয়ের ছেলেরা সেখানে গিয়ে রেজাউলকে পেটাতে শুরু করেন। মারধরের একপর্যায়ে গুরুতর আহত হন তিনি।

রেজাউলের মে‌য়ে খুলনা বিশ্ববিদ‌্যাল‌য়ের শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার দাবি করেন, ‘ওই দিন পূর্বশত্রুতার জেরে আব্বাকে শাবল দিয়ে আঘাত করেন চাচাতো ভাই লিটন। আব্বা চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ আগস্ট রা‌তে মারা গেছেন। তখন পুলিশি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সুরতহাল প্রতিবেদন না পাওয়ায় ময়নাতদন্তে দেরি হয়েছে। এ জন‌্য ওই দিন মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে আসতে পারিনি। পরে অনেক কষ্টে রোববার ময়নাতদন্ত ক‌রে সন্ধ্যায় কয়রার বাড়িতে পৌঁছাই। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

গত ৫ আগস্ট বিকেলে শেখ হা‌সিনা সরকারের পত‌নের পর থেকেই এলাকাজুড়ে উত্তেজনা দেখা দেয় বলে জানান স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. মাসুম বিল্লাহ। তিনি বলেন, শিক্ষক রেজাউল করিম বিএনপির একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে এলাকায় পরিচিত ছিলেন। তবে তাঁর চাচাতো ভাইয়েরাও আওয়ামী লীগের সমর্থক নন। এ ঘটনার সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক বিষয় জড়িত নয়। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সৃষ্ট উত্তেজনা আর পূর্বশত্রুতার কারণেই মারামারির ঘটনাটি ঘটে।

কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান ব‌লেন, ‘বিষয়টি জেনেছি। ওই সময় পুলিশের কার্যক্রম ছিল না। তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। মামলা দিলে নেওয়া হবে।’