ফরিদপুরে পুলিশের বাধায় মাঝপথে থামল বিএনপির মিছিল, সমাবেশও ‘সংক্ষিপ্ত’

বিএনপির কালো পতাকা মিছিলে পুলিশের বাধা। আজ শুক্রবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর শহরের মুজিব সড়কেছবি: প্রথম আলো

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ফরিদপুরে বিএনপির বের করা কালো পতাকা মিছিল পুলিশের বাধার মুখে পড়েছে। ফলে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছার আগেই মাঝপথে থামে এই মিছিল। সেখানে সমাবেশ করতে গেলে পুলিশের বাধার কারণে সেটিও সংক্ষিপ্ত করতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা।

‘দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীদের মুক্তি, সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও অবৈধ সংসদ বাতিলসহ এক দফা দাবিতে’কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার এই মিছিল-সমাবেশের আয়োজন করে ফরিদপুর বিএনপি। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা ১১টার দিকে জেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা কালো পতাকা, ব্যানার নিয়ে শহরের ব্রাহ্ম সমাজ সড়কে জেনারেল হাসপাতাল মোড় এলাকায় সমবেত হন। বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে সেখান থেকে কালো পতাকা মিছিল শুরু হয়। মিছিল থেকে বিক্ষোভকারীরা, ‘অবৈধ নির্বাচন মানি না, বাতিল কর’, ‘ডামি নির্বাচন মানি না, মানব না’, ‘ডামি সরকার চাই না, পদত্যাগ কর’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মিছিলটি মুজিব সড়ক ধরে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে গেলে মিছিলের গতি রোধ করেন পুলিশ সদস্যরা। মিছিলকারীরা প্রেসক্লাব পাড় হয়ে সামনে জনতা ব্যাংকের মোড়ের দিকে এগোতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাদের বাদানুবাদ হয়। তবে মিছিলটি আর এগোতে পারেনি। তখন বিএনপির নেতারা প্রেসক্লাবের পশ্চিম দিকে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন।

বক্তারা বলেন, এ সরকার গণবিরোধী সরকার। সিন্দাবাদের দৈত্যের মতো জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছে। ২০১৪ সালে বিনা ভোটে নির্বাচন করেছে, ২০১৮ সালে রাতের আঁধারে ভোট করেছে আর এ বছর ডামি, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে জগাখিচুড়ি মার্কা নির্বাচন করেছে। এ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত জাতির মুক্তি নেই। বক্তারা বলেন, এ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বে না বিএনপি। আন্দোলন সংগ্রাম করে এ সরকারের পতন ঘটাতে হবে।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ফরিদপুরে বিএনপির সমাবেশ
ছবি: প্রথম আলো
আরও পড়ুন

এ সময় মুজিব সড়কের পূর্ব পাশে জেনারেল হাসপাতাল থেকে ফরিদপুর পৌরসভা পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে পুলিশ সমাবেশের পরও সীমিত পর্যায়ে সড়কে যানবাহন চলাচল অব্যাহত রাখে। ১০ মিনিট বক্তব্য দেওয়ার পর অতিরিক্ত পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা এসে সমাবেশ সংক্ষিপ্ত করতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ বিএনপি নেতাদের। এ সময় পুলিশের দুটি গাড়ি ঘটনাস্থলে এলে বিএনপির কর্মীরা দৌড়াতে শুরু করেন। পরে নেতারা তাঁদের সভাস্থলে ডাকেন। এর কিছুক্ষণ পর পুলিশের কর্মকর্তারা এসে সমাবেশটি দ্রুত শেষ করতে বলেন।

কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব আফজাল হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক জুলফিকার হোসেন, জেলা যুবদলের সভাপতি রাজীব হাসান, মহানগর যুবদলের সভাপতি বেনজীর আহমেদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মোজাম্মেল হোসেন প্রমুখ।

বাধার বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. আবদুল গফফার প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি মিছিল ও সমাবেশ করার জন্য কোনো অনুমতি নেয়নি। আকস্মিক তারা এ কর্মসূচি করেছে। তিনি বলেন, শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে মিছিলটি জনতা ব্যাংকের মোড় পর্যন্ত যেতে দেওয়া হয়নি। সমাবেশ সংক্ষিপ্ত করতে পুলিশ বাধ্য করেনি দাবি করে আবদুল গফফার বলেন, ‘তাঁরা (বিএনপি নেতারা) নিজেরাই সমাবেশ শেষ করে যাঁর যাঁর গন্তব্যে চলে গেছেন।’