কুড়িগ্রামে ছাত্র আন্দোলনে আহত হওয়ার ২৮ দিন পর মারা যাওয়া আশিকের দাফন সম্পন্ন

কুড়িগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আশিকের কবর লাল–সবুজ পতাকায় ঢেকে দেওয়া হয়েছে। সোমবার দুপুরে উলিপুর উপজেলার সাতিভিটা গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

কুড়িগ্রামে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত হওয়ার ২৮ দিন পর মারা যাওয়া কলেজশিক্ষার্থী আশিকুর রহমান আশিককে (২৪) তাঁর গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের সাতভিটা গ্রামে তাঁর জানাজা হয়। জানাজায় হাজারো মানুষের ঢল নামে। স্থানীয় ইমাম মাওলানা সিরাজুল ইসলাম জানাজায় ইমামতি করেন। এরপর আশিকের মরদেহ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।

নিহত আশিক সাতভিটা গ্রামের কৃষক চাঁদ মিয়ার ছেলে। উলিপুরের পাঁচপীর ডিগ্রি কলেজে ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।

কুড়িগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আশিকের জানাজায় হাজারো মানুষের ঢল নামে। সোমবার দুপুরে উলিপুর উপজেলার সাতিভিটা গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ৪ আগস্ট কুড়িগ্রাম শহরের শাপলা চত্বরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শিক্ষার্থী-জনতার সংঘর্ষের সময় মাথায় ঢিল লেগে আশিক আহত হন। আহত অবস্থায় আশিককে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ১৮ আগস্ট তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রোববার আশিক মারা যান।

কুড়িগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত কলেজশিক্ষার্থী আশিকুর রহমান আশিক
ছবি: সংগৃহীত

আশিকের ছোট ভাই আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমার ভাই ও পরিবারের কেউ কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে ৪ আগস্ট আমি ও ভাইয়া আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলাম। আওয়ামী লীগের লোকজনের ঢিল ও পিটুনিতে আমিও আহত হয়েছিলাম। ভাইয়া মাথায় আঘাত পেয়ে বাড়িতে ফিরেছিল। কিন্তু আঘাতের কারণে তার বমি শুরু হয়। জ্বর আসে। পরে রংপুর হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাঁচানো গেল না। আঘাতের কারণে তার মাথায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছিল বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।’

আশিকের বাবা মো. চাঁদ মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘৪ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনে দুই ছেলের যাওয়ার খবর শুনে ছোট ছেলেকে ফোন করেছিলাম। সে জানায়, দুই ভাই মিছিলে যোগ দিতে কুড়িগ্রাম গেছে। সেখানে সংঘর্ষের সময় মাথায় ঢিল লেগে আশিক আহত হয়। আমার ছেলে কোনো রাজনীতি করত না। ছাত্রদের অধিকারের জন্য মিছিলে গিয়ে আমার ছেলেটার জীবন গেল।’