পাটগ্রামের দহগ্রাম
সড়ক সংস্কার হয় না, ভোগান্তি
পাটগ্রাম সদরের সঙ্গে দহগ্রাম ইউনিয়নের ২৫ হাজার মানুষের চলাচলের এটি একমাত্র পাকা সড়ক।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের নতুন বাজার থেকে গুচ্ছগ্রাম (রোটারি বাজার) মোড় পর্যন্ত সড়কের দৈর্ঘ্য সাড়ে ছয় কিলোমিটার। এর মধ্যে কার্তিপাড়া থেকে গুচ্ছগ্রাম বাজার মোড় পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার বেহাল হয়ে আছে। পিচ ও খোয়া উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে থাকে।
পাটগ্রাম সদরের সঙ্গে দহগ্রাম ইউনিয়নের ২৫ হাজার মানুষের যোগাযোগের এটি একমাত্র পাকা সড়ক। বেহাল সড়কের কারণে ইউনিয়নের অর্ধশত গ্রামের মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
ভাঙাচোরা সড়কের কারণে ভ্যানচালকেরা ভাড়া নিতে চান না। আর ভাড়া নিলেও এ জন্য অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) পাটগ্রাম উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সড়কের গুচ্ছগ্রাম বাজার মোড় থেকে কার্তিপাড়া গ্রাম পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার পর্যায়ক্রমে ২০১১ সালে এক কিলোমিটার ও ২০১৪ সালে দেড় কিলোমিটার সংস্কার করা হয়। এর পর থেকে ওই আড়াই কিলোমিটার আর সংস্কার করা হয়নি। অধিকাংশ স্থানে কার্পেটিং উঠে খানাখন্দে ভরে গেছে।
এলাকার ২০ জন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভারী বৃষ্টি ও প্রতিনিয়ত ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ ও সড়কের দুই পাশে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটি সংস্কার না করায় দহগ্রাম ইউনিয়নের ইউনিয়ন পরিষদ সড়ক, গুচ্ছগ্রাম বাজার, বিজিবি ক্যাম্প, নয়ারবাজার, হরিন্দ্রেরডাঙ্গা, মোমিনপুর, কাজীরডাঙ্গা, বসন্তেরবাড়ি, পাটলেরডাঙ্গা, কদুআমতলা, কার্তীপাড়া, মুন্সিপাড়া, সৈয়দপাড়া ও দহগ্রাম ইউনিয়নের অন্তত ১০০টি গ্রামের ২৫ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। তা ছাড়া পাটগ্রাম উপজেলা সদরে যাতায়াতে ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য সড়কটি ব্যবহার করা হয়।
দহগ্রাম ইউনিয়নের সাঁকোয়া নদী ওই ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে। নদীর ওপর রয়েছে ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু। এই সেতুর এপারে অন্তত ২৫ গ্রামের লোকজন ওই সড়কে চলাচল করে। আর ওপারে গুচ্ছগ্রামসহ (রোটারি বাজার), ইউনিয়ন পরিষদ, দহগ্রাম সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ২৫টি গ্রাম রয়েছে। গুচ্ছগ্রাম (রোটারি বাজার) মোড় থেকে ওই ইউনিয়নের কার্তীপাড়া গ্রামের শেষ সীমানা পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার বেহাল সড়কে চলাচলে সবাই ভোগান্তি পোহাচ্ছে।
দহগ্রাম ইউনিয়নের কার্তীপাড়া গ্রামের তোজ্জাম মিয়া (৫০) ও জহর আলীসহ (৬৫) কয়েকজন কৃষক বলেন, তাঁদের উৎপাদিত বিভিন্ন কৃষিপণ্য বিক্রির জন্য উপজেলা সদরের হাটবাজারে নিতে হয়। কিন্তু এই ভাঙাচোরা সড়কের কারণে ভ্যান চালকেরা ভাড়া নিতে চান না। আর ভাড়া নিলেও এ জন্য অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন। বেহাল সড়কের কারণে তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ভাঙাচোরা সড়কটি সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন বিজিবির এক সদস্য বলেন, সীমান্তে যাতায়াত ও ভারী যানবাহনের একমাত্র সড়ক এটি। এর বিকল্প গ্রামের ছোট সড়ক থাকলেও সেটি মাটির রাস্তা। ফলে সীমান্তে কোনো ঘটনা ঘটলে এই সড়ক দিয়ে সময়মতো ঘটনাস্থলে যাওয়া যায় না।
দহগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, এই সড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়ক বেহালের বিষয়টি উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় বারবার জানানো হচ্ছে।