নীলফামারীতে আসাদুজ্জামান নূরের বাসভবন ও আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুর

নীলফামারী শহরে সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরের বাসভবন ভাঙচুর করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরেছবি: প্রথম আলো

নীলফামারী শহরে আজ রোববার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে সংঘাতে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১১ জনকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কর্মসূচি চলাকালে বিক্ষোভকারীরা সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরের বাসভবন, আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর এবং পুলিশ বক্সে ভাঙচুর ও আগুন দেন। পুলিশ তাঁদের ওপর কাঁদানে গ্যাসের শেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।

আজ বেলা ১১টার দিকে নীলফামারী শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের অনেকেরই হাতে ছিল লাঠিসোঁটা। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের তালা ভেঙে ভেতরে ভাঙচুর করেন। পরে সেখানকার আসবাব ও বিভিন্ন কাগজপত্র সড়কে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এরপর সেখানে অবস্থিত পুলিশ বক্সটি ভাঙচুর করে আগুন দেওয়া হয়।

বেলা দুইটার দিকে উপজেলা সড়কে স্থানীয় সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরের বাসভবনে হামলা ও আগুন দেন বিক্ষোভকারীরা। তখন ওই বাসায় কেবল কেয়ারটেকার (তত্ত্বাবধায়ক) ছিলেন। সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী তরিকুল ইসলাম জানান, শতাধিক হামলাকারী বিভিন্ন কক্ষে প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। তারা বাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীদের ধাওয়ায় তারা বেরিয়ে যায় এবং বাইরে থাকা ১০টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে।

ওই ঘটনার পর বিএনপির কার্যালয়, জেলা বিএনপির সভাপতি আ খ ম আলমগীর সরকার ও সহসভাপতি মীর সেলিম ফারুকের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। আ খ ম আলমগীর সরকারের ছোট ভাইয়ের একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও হামলা হয়। শহরের উকিলপাড়ায় বিএনপি নেতা শামীম শাহ আলমের গাড়ির গ্যারেজে আগুনে তিনটি মাইক্রোবাস, একটি কার ও একটি ইজিবাইক পুড়ে যায়। বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে এই হামলা করেছেন।  

এদিকে আজ খবর সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন বিক্ষোভকারীরা। নীলফামারী প্রেসক্লাবের অর্থ সম্পাদক আবুল হোসেন শাহর মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। আহত হন এনটিভির সাংবাদিক ইয়াসিন মোহাম্মদ।

সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনের নামে আমার বাড়ি ভাঙচুর হওয়ার কথা নয়। যদি ছাত্ররা এই কাজ করে থাকেন, তাহলে তাঁদের কেউ মিসগাইড করেছে। আমি ছাত্রদের ছাত্র হিসেবেই দেখি। তাঁরা কোনো দলের, এ বিবেচনা করি না। আমার বাড়ি ভাঙচুর হওয়াকে কেন্দ্র করে যাতে আর কোনো প্রতিহিংসামূলক ঘটনা না ঘটে, সেটাই আমি বলব। আমি চাই নীলফামারীতে শান্তি বজায় থাকুক।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বিকেলে বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। ইটপাটকেলের আঘাতে অন্তত ২৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।