পানের বরজে সুপারিপাতা দিয়ে ঢাকা ছিল শিশুর হাত-মুখ বাঁধা লাশ
বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার একটি পানের বরজের পাশ থেকে পলিথিন ও সার্জিক্যাল টেপ দিয়ে হাত-পা ও মুখ বাঁধা এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার দুপুরে উপজেলার চরকচুরিয়া গ্রামে স্থানীয় এক ব্যক্তির বরজের পাশে একটি গর্ত থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিশুর নাম মো. আহসান বিশ্বাস। সাড়ে তিন বছর বয়সী আহসান নড়াইলের নড়াগাতি উপজেলার চরশুকতাইল গ্রামের কামরুজ্জামান বিশ্বাসের ছেলে। সে মায়ের সঙ্গে মোল্লাহাটের চরকচুরিয়া গ্রামে নানার বাড়িতে থাকত। পুলিশের ধারণা, ধর্ষণের পর শিশুটিকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার বিকেলে নানার বাড়ির পাশে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে আম কুড়াতে গিয়ে নিখোঁজ হয় শিশুটি। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে রাতেই শিশুটির বাবা মোল্লাহাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। আজ দুপুরের দিকে স্থানীয় দাউদ নামের এক ব্যক্তি তাঁর পানের বরজের পাশে একটি গর্তে সুপারির পাতা দিয়ে ঢাকা একটি লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠায়।
শিশুটির নানা ফিরোজ আহমেদের দাবি, জমিজমা-সংক্রান্ত বিরোধ ও পূর্বশত্রুতার জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তিনি কয়েকজন প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে শিশুটিকে হত্যার অভিযোগ করে বলেন, ‘তারা বিভিন্ন সময় আমাকে হুমকি দিত। আমি হত্যাকারীদের বিচার চাই।’
এদিকে একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা হুমায়রা বেগম। জ্ঞান ফিরলেই আবার বিলাপ করছেন। স্বজনদের সান্ত্বনায়ও শান্ত হচ্ছে না মায়ের মন। বিলাপ করতে করতে বারবার হত্যাকারীদের বিচারের দাবি করছিলেন।
মোল্লাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আশরাফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শিশুটিকে ধর্ষণের পর শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়েছে। পারিবারিক ও সামাজিক অবক্ষয়ের কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।