শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈধভাবে আসন বরাদ্দ পেয়ে হলে উঠছেন ছাত্ররা

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈধভাবে আসন বরাদ্দ পেয়ে হলে উঠছেন ছাত্ররা। আজ মঙ্গলবার সকালেছবি: প্রথম আলো

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে এক যুগের বেশি সময় পর বৈধভাবে আসন বরাদ্দ পেয়েছেন ছাত্ররা। আজ মঙ্গলবার তাঁরা হলে উঠতে শুরু করেছেন।

সকাল ১০টায় শাহপরান হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে গিয়ে দেখা যায়, দুই হলের ফটকেই ছাত্ররা হলে ওঠার জন্য ভিড় করছেন। সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা বরাদ্দ পাওয়া আসনে উঠতে থাকেন। এ সময় কথা হয় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে। অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মঈনউদ্দিন বলেন, ‘আগে হলের আশপাশে এলেই ভয় কাজ করত। হলে ওঠার জন্য ছাত্রলীগ করা লাগত। এখন আর সেই ভয় নেই। বৈধভাবে আসন বরাদ্দ পেয়েছি।’

কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী আলমগীর হোসেন বলেন, ‘মেধা ও বিশেষ ব্যবস্থায় আসন বরাদ্দ না হলে আমিসহ আমাদের অনেক সহপাঠীর হলে থাকার সৌভাগ্য কখনো হতো না। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির শুরু থেকেই মেসে থাকতে হয়েছে। খুবই ভালো লাগছে যে হলে সিট বরাদ্দ পেয়েছি। এতে আসন দখলবাজদের ইতি হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরে ছাত্রদের তিন হলের আসন সংস্কারের বিষয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানা দাবি ওঠে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর জরুরি একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় নতুন নীতিমালা পাস করেন শিক্ষকেরা। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ আসন মেধার ভিত্তিতে ও ৪০ শতাংশ বিশেষ প্রয়োজনে (দারিদ্র্য, প্রতিবন্ধী, সাংবাদিক, বিশ্ববিদ্যালয় টিমের খেলোয়াড় প্রভৃতি) শিক্ষার্থীদের মধ্যে বরাদ্দের সিদ্ধান্ত হয়। ৩ থেকে ৬ অক্টোবরে ছাত্রদের হলের আসন বরাদ্দ দেয় নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন কমিটি। এরপর ৮ থেকে ১৪ অক্টোবরের মধ্যে আসন বরাদ্দ পাওয়া ছাত্ররা ভর্তি সম্পন্ন করেন। মঙ্গলবার থেকে শিক্ষার্থীরা হলে উঠছেন।

শাহপরান হলের প্রাধ্যক্ষ ইফতেখার আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে আমরা সব সময় হলে অবস্থান করছি। সুষ্ঠু ও শৃঙ্খলার সহিত ছাত্ররা হলে উঠছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক মো. এছাক মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রদের তিন হলে ৮০ শতাংশ আসন দ্বিতীয় বর্ষ থেকে মাস্টার্সের ছাত্রদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ২০ শতাংশ আসন প্রথম বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের জন্য রাখা হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৮ হাজার। এর তুলনায় মাত্র ৩৫ শতাংশ শিক্ষার্থী আবাসিক হলে থাকার সুবিধা পাচ্ছেন। বাকিরা বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন বিভিন্ন মেসে ও ভাড়া বাসায় থাকেন। এতে নানা ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হয় শিক্ষার্থীদের। এ ছাড়া আসনসংকট নিরসনে দ্রুতই নতুন হল নির্মাণের জন্য গত ৬ অক্টোবর মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‍উপাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রদের একটি ও ছাত্রীদের একটি হলের নির্মাণকাজ শিগগিরই শুরু হবে। আশা করি শতভাগ শিক্ষার্থী আবাসিক সুবিধা পাবে।’