ফরিদপুরে হাতাহাতি ও আসবাব ভাঙচুরে পণ্ড জেলা বিএনপির সভা
ফরিদপুরে জেলা বিএনপির মতবিনিময় সভা হট্টগোল, হাতাহাতি, চেয়ারসহ আসবাব ভাঙচুরে পণ্ড হয়ে গেছে। বুধবার বিকেলে শহরের ফরিদ শাহ সড়কের মনা প্লাজার চারতলায় অবস্থিত জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
জেলা বিএনপির এক নেতা জানিয়েছেন, সভায় বিভিন্ন উপজেলার স্থগিত কমিটির সদস্যরা উপস্থিত থাকায় ও জেলা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন সদস্যকে আমন্ত্রণ না জানানোয় দলের একাংশের নেতারা এর সূত্রপাত করেন।
সভায় স্থগিত কমিটির সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ কে কিবরিয়া প্রথম আলোকে বলেন, এটি ছিল রুটিন ওয়ার্ক। এ জন্য তাঁদের ডাকা হয়েছিল।
জেলা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন নেতাকে না ডাকার বিষয়ে তিনি বলেন, অনেককে জানানো হয়েছে। অনেকে না–ও জানতে পারেন। আবার অনেকে ফরিদপুরে ছিলেন না বলে হয়তো আসতে পারেননি।
হট্টগোলের কথা স্বীকার করলেও ভাঙচুর ও সভা পণ্ড হয়ে যাওয়ার দাবি নাকচ করে দেন এ কে কিবরিয়া। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী বলেন, রাজনৈতিক দলের দলীয় সভায় একটু হইচই হতেই পারে। তবে চেয়ার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। সন্ধ্যার পর সভার কাজ সুষ্ঠুভাবেই শেষ হয়েছে।
হট্টগোল ও চেয়ার ভাঙচুরের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে মোদাররেছ আলী বলেন, এ দেশে ভিডিও নিয়ে নানা রকম কারসাজি হয়। কোন সময়ের ভিডিও কোন সময়ের ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়।
১০ দফা দাবির সমর্থনে ২৫ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে বিএনপির পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এ কর্মসূচিকে সামনে রেখে জেলা সদরে বিএনপি কার্যালয়ে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এতে জেলা বিএনপির পাশাপাশি বাকি নয়টি উপজেলার বিএনপির পাঁচজন করে নেতা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, গত ২৯ জানুয়ারি আলফাডাঙ্গা উপজেলা ও পৌরসভা, সদরপুর উপজেলা ও পৌরসভা এবং ভাঙ্গা পৌরসভা গঠিত আহ্বায়ক কমিটি স্থগিত করা হয়। কেন্দ্রীয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ স্বাক্ষরিত এ–সংক্রান্ত চিঠি জেলা কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবকে পাঠানো হয়।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জুলফিকার হোসেন বলেন, ওই সভায় তাঁকেসহ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন, খন্দকার ফজলুল হক ও দেলোয়ার হোসেনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। কিন্তু দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে স্থগিত করা আলফাডাঙ্গা, ভাঙ্গা ও সদপুরের বিলুপ্ত করা পাঁচটি কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ খবর শুনে তিনি ওই সভায় গিয়ে দলের আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের কাছে এর ব্যাখ্যা চান। একপর্যায়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী তাঁকে ধমক দেন।
সভায় থাকা একাধিক নেতা বলেন, এরপর সভায় হট্টগোল শুরু হয়ে যায়। একপর্যায়ে নেতা-কর্মীরা চেয়ারসহ আসবাব ভাঙচুর শুরু করেন। ঘটে হাতাহাতির ঘটনাও। ওই সময় বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত নেতারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।