জাহাঙ্গীরনগরের তিন শিক্ষার্থী তিন দফা দাবিতে আমরণ অনশনে
ফলাফল পুনর্মূল্যায়নসহ তিন দফা দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন শুরু করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের তিন শিক্ষার্থী। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো প্রশাসনিক ভবনের সামনে তাঁরা আমরণ অনশন শুরু করেন। আজ সোমবার বেলা পৌনে ১১টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা অনশনরত ছিলেন।
এর আগে গতকাল বিকেল পৌনে চারটার দিকে একই দাবিতে আইন অনুষদের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী একই স্থানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। অবস্থান কর্মসূচি পালন করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে তিনজন শিক্ষার্থী আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। বাকিরা সন্ধ্যা হলে ফিরে যান।
অনশনরত তিন শিক্ষার্থী হলেন আইন অনুষদ ছাত্রসংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) মো. আসাদুজ্জামান, ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মালিহা হাসান মাইশা ও একই ব্যাচের রাফা রওনক। তাঁদের দাবিগুলো হলো আইন অনুষদের ৪৯তম ব্যাচ থেকে ৫১তম ব্যাচের ফলাফল পুনর্মূল্যায়ন, ভর্তি পরীক্ষায় আইন অনুষদের জন্য আগের মতো আলাদা ইউনিট করা এবং স্থায়ী ভবন বরাদ্দ করা।
গতকাল দিবাগত রাত সোয়া দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায়, বিছানার ওপর কাঁথা বিছিয়ে শুয়ে আছেন শিক্ষার্থীরা। পাশে তিন দফা দাবিসংবলিত লেখা ব্যানার টাঙানো এবং কয়েকজন শিক্ষার্থী পাশে বসে আছেন।
আইন অনুষদের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, তাঁদের বিভাগের দুজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রকাশিত ফলাফলে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে ফলাফল পুনর্মূল্যায়নসহ কয়েকটি দাবিতে গত আগস্টে আন্দোলন হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ অক্টোবর তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সম্প্রতি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি। গতকাল বিকেলে ওই তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় আলোচনা শুরু হলে তাঁরা ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। এরপর সভা শেষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি পূরণের বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দেওয়া হলেও লিখিত প্রতিশ্রুতির দাবিতে তিনজন শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে যান।
গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, ‘আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। কনভিন্স করার চেষ্টা করেছি। আগের কোনো প্রশাসনই আইন ও বিচার বিভাগকে গুরুত্ব দিয়ে দেখেনি, কিন্তু আমরা দেখছি। আজকের সিন্ডিকেট মিটিং পর্যন্ত যাতে তারা সময় দেন, সেটা বলেছি। কিন্তু তারা সেই সময়টুকুও দিচ্ছে না।’
অনশনরত শিক্ষার্থী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের তিনটা দাবির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মৌখিক আশ্বাস দিচ্ছে, কিন্তু লিখিত কোনো ডকুমেন্টস দিচ্ছে না। আমরা তাদের আর বিশ্বাস করতে পারছি না। আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি, এ বিষয়গুলো নিয়ে প্রশাসন আমাদের সঙ্গে টালবাহানা করছে। যতক্ষণ না লিখিত পাচ্ছি, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।’