দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির লাশ নিয়ে নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিক্ষোভ
ময়মনসিংহের ত্রিশালে ঢাকা-ময়মনসিংহের সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ডে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত এক ব্যক্তির লাশ নিয়ে নিরাপদ সড়কের দাবিতে ওই মহাসড়কে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বিক্ষোভকারীদের জন্য আজ সোমবার সকাল ৯টা থেকে বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত অবরোধ থাকে মহাসড়কটির সাইনবোর্ড এলাকা। এতে প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় মানুষেরা জানান, ১ জুন রাতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় একটি গাড়ির ধাক্কায় তোফায়েল আকন্দ (৩০) নামে এক স্থানীয় যুবক গুরুতর আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রোববার রাতে মারা যান তোফায়েল। তিনি সাইনবোর্ড এলাকার বাসিন্দা সাহাব উদ্দিন আকন্দের ছেলে।
আজ সকালে তোফায়েলের লাশ এলাকায় আনা হয়। এর মধ্যে একই এলাকায় যাত্রীবাহী বাস ও পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষ হয়। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনার পরপরই বিক্ষুব্ধ জনতা তোফায়েলের লাশ নিয়ে নিরাপদ সড়কের দাবিতে সড়কে অবরোধ করেন সকাল ৯টার দিকে। এ সময় এলাকাবাসী ‘বাঁচার মতো বাঁচতে চাই, নিরাপদ সড়ক চাই’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’সহ নানা ধরনের স্লোগান দেন। একপর্যায়ে মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে মহাসড়ক ব্যারিকেড দিয়ে অবরোধ করে রাখেন বিক্ষুব্ধরা। বিক্ষোভকালে সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ড এলাকার আশপাশে বাসিন্দাদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন। সড়কেই নিহত ব্যক্তির জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
খবর পেয়ে বেলা ১১টার দিকে ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের বুঝিয়ে ওই স্থানে মহাসড়কের অপরিকল্পিত কার্পেটিং সরিয়ে নেওয়ার এবং একটি গতিরোধক স্থাপনের আশ্বাস দেন। পরে সড়কে নিহত তোফায়েলের জানাজা শেষে সড়ক থেকে সরে যান বিক্ষোভকারীরা।
ওসি ওসি কামাল হোসেন বলেন, স্থানীয় বাসিন্দারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়। তোফায়েল মৃত্যুর ঘটনায় পরিবার থেকে অভিযোগ পেলে সড়ক পরিবহন আইনে মামলা নেওয়া হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোজম্মেল হক, আরিফুল হক এরশাদসহ কয়েকজন জানান, সড়কটিতে সম্প্রতি অপরিকল্পিতভাবে নতুন করে কার্পেটিং করা হয়। এতে বেশি পরিমাণ পিচ ব্যবহার করায় গরমে গলে যায় এবং বৃষ্টিতে পিচ্ছিল হয়ে যায়। এ কারণে চার মাস ধরে সাইনবোর্ড এলাকায় দুর্ঘটনা বেড়ে গেছে। এলাকাটিতে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছে না যানবাহন। ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কেবিএম সাদ্দাম হোসেন বলেন, কার্পেটিংয়ের কারণে দুর্ঘটনা হচ্ছে সেটি ঠিক নয়। তবে এলাকাটিতে একটি বাঁক থাকায় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে ধারণা করা হচ্ছে। এলাকাটিকে দুর্ঘটনাপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করে রোববার সাইনবোর্ড টানানো হয়েছে। মহাসড়কে গতিরোধক নির্মাণের নিয়ম না থাকলেও স্থানীয় মানুষদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আজ দুটি গতিরোধক নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।