রায় দ্রুত কার্যকর ও সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি

অনন্ত বিজয় দাশছবি: সংগৃহীত

সিলেটের বিজ্ঞানলেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ (৩২) হত্যা মামলার রায় দ্রুত কার্যকর ও সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি উঠেছে। আজ রোববার অনন্ত হত্যাকাণ্ডের ৯ বছর পূর্তিতে তাঁর স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা এ দাবি জানান।

২০১৫ সালের ১২ মে সিলেট নগরের সুবিদবাজারে নুরানি আবাসিক এলাকার নিজ বাসার সামনে খুন হন অনন্ত। পরে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (এবিটি) এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে। পেশায় ব্যাংকার অনন্ত বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি ‘যুক্তি’ নামের বিজ্ঞানবিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। এ ছাড়া বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

অনন্ত হত্যার পর যুবনেতা ও সামাজিক সংগঠক মঈনুদ্দিন আহমদ জালালের (বর্তমানে প্রয়াত) উদ্যোগে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলের পাশে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। প্রতিবছর ১২ মে ওই স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন সিলেটের প্রগতিশীল রাজনীতিবিদ, লেখক, শিক্ষক, সংস্কৃতিকর্মীসহ অনন্ত বিজয়ের সহযোদ্ধারা।

আজ দুপুর ১২টায় স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। এ সময় অনন্ত বিজয়ের স্মৃতি রক্ষার্থে তাঁকে হত্যার স্থানে স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণেরও দাবি জানান বক্তারা। তাঁরা বলেন, অনন্তসহ কয়েকজন ব্লগার ও মুক্তমনা লোককে হত্যার মাধ্যমে দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটে। ২০২২ সালের ৩০ মার্চ অনন্ত হত্যা মামলায় চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ রায় এখনো কার্যকর হয়নি। এ ছাড়া মৃত্যুদণ্ড পাওয়া তিনজন এখনো পলাতক। দ্রুত তাঁদের গ্রেপ্তার ও রায় কার্যকর করা উচিত।

সমাবেশ সঞ্চালনা করেন গণজাগরণ মঞ্চ সিলেটের মুখপাত্র দেবাশীষ দেবু। বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাজিয়া চৌধুরী, অনন্তর ভগ্নিপতি আইনজীবী সমর বিজয় সী শেখর, পরিবেশকর্মী আবদুল করিম চৌধুরী কিম ও আশরাফুল কবির, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি রজতকান্তি গুপ্ত ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমদ, লেখক এনাম আহমদ, প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী নিরঞ্জন সরকার অপু ও প্রণব জ্যোতি পাল, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক মাহবুব রাসেল, রাজীব রাসেল, দেবজ্যোতি দেবু, অরূপ বাউল, উজ্জ্বল চক্রবর্তী, রনি দাশ প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, অনন্ত হত্যাকাণ্ডের রাতেই সিলেট মহানগরের বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাতনামা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন অনন্ত বিজয় দাশের ভাই রত্নেশ্বর দাশ। ২০২২ সালের ৩০ মার্চ সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনাল সিলেটের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব এ হত্যা মামলার রায়ে চারজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও একজনকে খালাস দেন।

মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন ও খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ, সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ এবং কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ। এ ছাড়া সিলেট নগরের রিকাবীবাজার এলাকায় বসবাসকারী সাফিউর রহমান ওরফে ফারাবী সাফিউর রহমানকে মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আবুল খায়ের রশীদ আহমদ ছাড়া অপর তিন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি পলাতক।