বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ায় মেজর (অব.) মোহাম্মদ শাহজাহান ওমর, বীর উত্তমের প্রশংসা করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শুক্রবার বিকেল বরিশাল নগরের বঙ্গবন্ধু উদ্যানের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যের একপর্যায়ে বলেন, শাহজাহান ওমর ঘরের ছেলে, আবার ঘরে ফিরে এসেছেন।
জনসভায় ভাষণের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী বরিশাল বিভাগের সংসদীয় আসনগুলোর দলীয় প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন। এ সময় বলেন, ‘ঝালকাঠিতে মোহাম্মদ শাহজাহান ওমর সন্ত্রাসী দল ছেড়ে এখন নৌকায় উঠেছেন। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে এসেছেন।’
এর আগে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পর ৬ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার ভবনের করিডরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শাহজাহান ওমর বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমার পুরোনো দল, মাঝে অন্য জায়গায় ছিলাম। এখন ফিরে এসেছি।’
শাহজাহান ওমর ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের সেচ, পানি উন্নয়ন ও বন্যানিয়ন্ত্রণ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। এরপর ২০০১ সালে বিএনপি আবার সরকার গঠন করলে তিনি ভূমি প্রতিমন্ত্রী হন। ওই সরকারের মেয়াদেই তিনি পরে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন।
২৮ অক্টোবর ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সহিংসতার পর পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় ৪ নভেম্বর রাতে শাহজাহান ওমরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ঢাকার নিউমার্কেট থানার বাসে আগুন দেওয়ার একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। ওই মামলায় তিন দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয় বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতাকে। প্রায় চার সপ্তাহ কারাবন্দী থাকার পর ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন পান শাহজাহান ওমর। কেরানীগঞ্জে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পরদিন রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ইউটিসি ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার কথা জানান। তিনি বলেন, ঝালকাঠি-১ আসনে তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। নৌকার প্রার্থী হিসেবে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তিনি। এরপর তাঁকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠান বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শাহজাহান ওমর আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পর ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া) আসনের আওয়ামী লীগের নেতারা তাঁকে বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরে ঝালকাঠি-২ (সদর-নলছিটি) আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু তাঁর বরিশাল নগরের বগুড়া সড়কের বাসভবনে দুই পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে সমঝোতা করে দেন।