নারায়ণগঞ্জে পুরোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুই এইচএসসি পরীক্ষার্থী কারাগারে

কারাগারপ্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় আটক দুই শিক্ষার্থীকে নাশকতা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের পুরোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ১৮ জুলাই বিকেলে সাইনবোর্ড এলাকা থেকে রাজধানীর ডেমরার ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের দুই এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ।

পরে তাঁদের গত জানুয়ারি মাসে ফতুল্লা মডেল থানার নাশকতা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা পুরোনো দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে তাঁরা কারাগারে। পরিবারের দাবি, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় আটক করলেও তাঁদের পুরোনো নাশকতা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পুলিশের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার করা দুই পরীক্ষার্থী হলেন রাজধানীর ডেমরার মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ইজতেজার সৃজন চৌধুরী ও মাহতাব জামাল মাহিন। ইজতেজার সৃজন চৌধুরী নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁ মোগড়াপাড়া এলাকার সিরাজ উদ্দিন চৌধুরীর ছেলে ও মাহতাব জামাল মাহিন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জের সাহেবপাড়া এলাকার জামাল আবদুল বাসেদের ছেলে। এ ছাড়া তাঁদের সঙ্গে গ্রেপ্তার অপর শিক্ষার্থী আজমল হোসেন নাহিন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থী।

ইজতেজার সৃজন চৌধুরীর ভাই ইফতেখার সায়মন চৌধুরী প্রথম আলোকে জানান, ১৮ জুলাই সকালে তাঁর ছোট ভাই ইজতেজার সৃজন চৌধুরী ও মাহতাব জামান মাহিন কলেজ ক্যাম্পাসে যান। সেখান থেকে শনির আখড়া এলাকায় তাঁরা কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেন। সেখান থেকে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ইজতেজার, মাহিন ও নাহিন রিকশাযোগে বাড়ি ফেরার পথে সাদ্দাম মার্কেট এলাকা থেকে পুলিশ তাঁদের আটক করে। পরে তাঁদের গত জানুয়ারি মাসে নাশকতা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের পৃথক দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

মাহিনের বাবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জামাল আবদুল বাসেদ জানান, মাহিন এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন। কারাগারে বসে কীভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবেন বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। ছেলে গ্রেপ্তারের পর থেকে চিন্তায় মাহিনের মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

দুই শিক্ষার্থী কারাগারে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার মামুনুর রশিদ। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, তাঁরা কারাগার থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেছেন।

ইজতেজার সৃজন চৌধুরীর আইনজীবী মোবাশ্বেরা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের করা ওই মামলায় আসামি বিএনপির নেতা-কর্মীরা। কিন্তু ওই মামলায় ছাত্রদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন দেওয়া হলেও পরে তাঁদের জামিন স্থগিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, পরীক্ষার্থী কেউ গ্রেপ্তার হয়ে থাকলে তাঁরা যাতে দ্রুত জামিন পান সেই উদ্যোগ নেওয়া হবে। তাঁরা ওই মামলায় যাতে অভিযোগপত্রভুক্ত না হন, সেই ব্যবস্থা করা হবে।