বৃষ্টির পর এবারও কি চট্টগ্রামে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়বে

ডেঙ্গুপ্রতীকী ছবি

থেমে থেমে বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে নগরে মশার উপদ্রব বেড়েছে। আর মশা ডেঙ্গুর উদ্বেগ ছড়িয়েছে। চলতি মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। গত বুধবার নতুন করে ১০ জন রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আজ শুক্রবার সর্বশেষ ৪ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে চিকিৎসকদের আশঙ্কা।

এ নিয়ে এ বছর মোট ২৩৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তিনজন। বর্তমানে ২১ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডেঙ্গুতে রোগী বাড়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী।

মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, বৃষ্টি থামার পর মশা বাড়বে। জমে থাকা পানিসহ বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গুবাহী এডিস মশা জন্মাবে। এ সময়টাতে ডেঙ্গু রোগী বাড়তে শুরু করে। সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। সবাইকে ডেঙ্গু প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এখন ডেঙ্গুর মৌসুম।

তবে সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, এটা ডেঙ্গু রোগীর আসল চিত্র নয়। কারণ, অনেক হাসপাতাল ও রোগনির্ণয় কেন্দ্র থেকে ডেঙ্গু আক্রান্তের তথ্য আসে না। অনেকে আক্রান্ত হয়ে বাসায়ও চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। এ সংখ্যাটা আক্রান্তের মোট তালিকায় নেই। ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে সিভিল সার্জন জানান।

গত বছর চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৮৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। একই সময়ে ১০৭ জন মারা যান। ওই বছর সবচেয়ে বেশি ৩ হাজার ৮৯২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন সেপ্টেম্বর মাসে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জুন থেকে মূলত ডেঙ্গু মৌসুম শুরু হয়; সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায়। এবারও জুলাই থেকে ডেঙ্গু বাড়তে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি থেমে গেছে এখন। বৃষ্টি থামার পর মূলত মশার উপদ্রব বাড়ে। এবারও এ লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এ জন্য সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ ও সিটি করপোরেশন।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন গত মঙ্গলবার ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলার একটি প্রস্তুতি সভা করেছে। সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এতে উপস্থিত ছিলেন। তিনি এ সময় পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের মশার প্রজনন স্থান চিহ্নিত করে ধ্বংস করার নির্দেশনা দেন। ওষুধ ছিটানোর পরামর্শের পাশাপাশি জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরির আহ্বান জানান।