ব্যবসায়ীর সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা নিয়ে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

রংপুর মহানগরের প্রেসক্লাব মার্কেটে মুঠোফোন কেনাকে কেন্দ্র করে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। এর প্রতিবাদে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ। গতকাল রাতে প্রেসক্লাবের সামনেছবি: প্রথম আলো

রংপুর মহানগরের প্রেসক্লাব মার্কেটের একটি দোকান থেকে ৩০ হাজার টাকায় একটি মুঠোফোন কেনেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহাদী হাসান। ডিসপ্লের সমস্যা জানিয়ে কয়েক দিন পর মুঠোফোনটি ফেরত দিতে গেলে ব্যবসায়ীদের হাতে তিনিসহ তিনজন শিক্ষার্থী মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রেসক্লাবের সামনে সড়ক অবরোধ শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আশ্বাসে দিবাগত রাত ১২টার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়েছে।

এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় মাহাদীকে মারধর করেন ওই মুঠোফোন ব্যবসায়ী। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ইংরেজি বিভাগের ছাত্র মাহাদী মুঠোফোনটি পরিবর্তন করে অন্য আরেকটি চান। কিন্তু দোকানদার অন্য ফোন দিতে রাজি হননি। একপর্যায়ে ওই মোবাইল ব্যবসায়ী মাহাদীর গায়ে হাত তোলেন। তাঁর সঙ্গে থাকা একই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের মোহাম্মদ সৌরভ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের জামশেদ আলী প্রতিবাদ করলে আশপাশের কয়েকজন দোকানদার মিলে তাঁদের সবাইকে মারধর করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হয়ে সড়ক অবরোধ করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রাত ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন। পুলিশ দ্রুত অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলেও শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে স্লোগান দেন। পরে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ফেরদৌস রহমান বলেন, রাত ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রেসক্লাব ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হয়েছে—অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত প্রেসক্লাব মার্কেট বন্ধ থাকবে। আহত মাহাদী ও সৌরভকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জামশেদ প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনায় দুজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতপরিচয় ৮ থেকে ১০ জনের নামে মামলা হয়েছে বলে জানান রংপুরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান। তিনি বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এদিকে এ ঘটনার পর অভিযুক্ত ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে সটকে পড়েন। মুঠোফোনে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। প্রেসক্লাব মার্কেটের ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান আফজাল বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আজ মঙ্গলবার প্রেসক্লাব মার্কেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।