পঞ্চগড়ে একাধিক ছাত্রকে ধর্ষণের অভিযোগে মাদ্রাসাশিক্ষক গ্রেপ্তার
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসার তিনজন ছাত্রকে (১৩ থেকে ১৬ বছর বয়সী) ধর্ষণের অভিযোগে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক মিজানুর রহমানকে (৪২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে উপজেলা শহরের ওই মাদ্রাসায় অভিভাবকদের আন্দোলনের মুখে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে থানা নিয়ে যায় দেবীগঞ্জ থানার পুলিশ।
গতকাল রাতেই ধর্ষণের শিকার এক ছাত্রের বাবা বাদী হয়ে ওই শিক্ষককে আসামি করে দেবীগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে শিক্ষক মিজানুর রহমানকে আদালতে হাজির করেছে পুলিশ।
ধর্ষণের শিকার ছাত্রদের মধ্যে একজনের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপর দুজনকেও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হবে। এ ছাড়া ধর্ষণের শিকার ছাত্রদের আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার মিজানুর রহমান নীলফামারী জেলার সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ গোড়গ্রাম এলাকার বাসিন্দা। তিনি মাদ্রাসাটিতে আবাসিক প্রধান শিক্ষক (মুহতামিম) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বিক্ষোভের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
পুলিশ, মামলার এজাহার ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনজন আবাসিক ছাত্রকে বিভিন্ন সময়ে নিজ কক্ষে ডেকে ধর্ষণ করেন মিজানুর রহমান। এ ছাড়া একই সময়ে তিনি আরও তিন ছাত্রকে (১০-১২ বছর বয়সী) কক্ষে ডেকে নিয়ে নানা রকমের যৌন নিপীড়ন করেছেন। এ নিয়ে ছাত্রদের পরিবারের পক্ষ থেকে গত মঙ্গলবার মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করা হয়। গতকাল এক জরুরি সভা ডেকে অভিযুক্ত শিক্ষক মিজানুর রহমানকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেয় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
এদিকে চাকরিচ্যুত হওয়ার পরও ওই শিক্ষক মাদ্রাসায় অবস্থান করছেন এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে গতকাল সন্ধ্যার পর অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন। পরে অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন ওই শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে মাদ্রাসার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরকার ইফতেখারুল মোকাদ্দেম বলেন, মাদ্রাসাটি কয়েক দিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত একটি ধর্ষণ মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার শিক্ষককে আদালতে হাজির করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ধর্ষণের শিকার এক ছাত্রকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার আদালতে ওই ছাত্রের ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণের কথা রয়েছে।