‘মেয়েটা আমার চোখের সামনে ছটফট করতে করতে মইরা গেল’

সড়ক দুর্ঘটনা
প্রতীকী ছবি

স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে রাজধানী ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরে ফিরছিলেন লিটন মাতুব্বর। দূরপাল্লার কোনো বাসে আসন না পেয়ে তাঁরা ছোট যানবাহনে ভেঙে ভেঙে ফরিদপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত পোঁছান। এরপর মাহিন্দ্রায় (থ্রি হুইলার) করে বাড়ির পথে রওনা দেন।

এ সময় একটি পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় মাহিন্দ্রা থেকে ছিটকে পড়ে তাঁর ১০ বছর বয়সী শিশুকন্যা তানজিলা। এতে ওই পিকআপ ভ্যানের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তার।

মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে রাজৈর উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত তানজিলার বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটকচর এলাকায়। সে ঢাকার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

লিটন মাতুব্বর বুক চাপড়াতে চাপড়াতে বলেন, ‘ভালোভাবেই ঢাকা থেকে আসতেছিলাম। বাড়ির কাছাকাছি আইসা কী থিকা কী হইয়া গেল। মেয়েটা আমার চোখের সামনে ছটফট করতে করতে মইরা গেল। বাবা হইয়া আমি কিছুই করতে পারলাম না।’

রাজৈর থানার পরিদর্শক সঞ্জয় ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, মাহিন্দ্রাটি একটি ছোট যানবাহনকে ওভারটেক করতে যাচ্ছিল। তখন পিকআপের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। শিশু তানজিল মহাসড়কে পড়ে ওই পিকআপের চাকায় পিষ্ট হয়।

রাজৈর থানা ও হাইওয়ে পুলিশ এবং প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, মাহিন্দ্রাটি রাজৈর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে গেলে বরিশাল থেকে আসা বিপরীতমুখী একটি পিকআপ ভ্যান সেটিকে ধাক্কা দেয়। এ সময় মাহিন্দ্রা থেকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে ছিটকে পড়ে পিকআপ ভ্যানটির চাকায় পিষ্ট হয় তানজিলা।

স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মস্তফাপুর হাইওয়ে পুলিশ থানার পরিদর্শক আবু নাঈম মো. মোফাজ্জেল হক প্রথম আলোকে বলেন, পিকআপ ভ্যানটি হাইওয়ে পুলিশ জব্দ করেছে। তবে চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।