ফ্যাসিস্ট সরকারকে আর ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হবে না: জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান
‘৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে নতুন করে দেশ স্বাধীন হয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকারকে আবারও ক্ষমতায় আনার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা বলতে চাই, ফ্যাসিস্ট সরকারকে আর ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হবে না। বিগত সরকারের সময়ে দেশে আইনের শাসন ছিল না। বিচারের নামে দেশে প্রহসন হয়েছে। বিচারের নামে ফাঁসি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান (আযাদ) রাজবাড়ীতে আজ শনিবার দলটির রুকন সম্মেলনে এসব কথা বলেন। আজ দুপুরে রাজবাড়ী পৌরসভা মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী রাজবাড়ী জেলা শাখার এই রুকন সম্মেলনে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।
বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা খুবই সীমিত উল্লেখ করে জামায়াতের এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা শুধু কবর জিয়ারত ও দোয়া মাহফিলের মোনাজাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এ দেশের প্রেসিডেন্টের পদটিই এমন। প্রধানমন্ত্রীই সকল ক্ষমতার সর্বেসর্বা। ১৫ বছরের আবর্জনা যদি আমরা ধুয়েমুছে পরিষ্কার করতে না পারি, তাহলে আবারও ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার সম্ভাবনা থেকে যায়।’
এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘আমরা বিজয়ের প্রথম ধাপ অতিক্রম করেছি অভ্যুথানের মধ্য দিয়ে; কিন্তু চূড়ান্ত বিজয় আমাদের আসেনি। যেদিন দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। দেশে গণতান্ত্রিক সরকার কায়েম হবে। জনগণের ভোটাধিকারের ভিত্তিতে নির্বাচিত সরকার কায়েম হবে। সর্বোপরি এতে দেশ বৈষম্যমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত হবে এবং ন্যায়বিচার কায়েম হবে। যদি সামাজিক ন্যায়বিচার না আসে তাহলে মানুষের মর্যাদা, সমতা কোনোটাই ফিরে আসবে না। সে জন্যই আমাদের সংস্কার করতে হবে।’
ইসলামী জীবন বিধান মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করে হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘আমরা ইসলাম ব্যতীত কারও দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বাসী নই। আমার জ্ঞানের উৎস হচ্ছে, কোরআনে কী বলা হয়েছে ও নবী রাসুলগণ কী কাজ করেছেন। প্রত্যেক মুসলমানকে ইসলামের জীবন বিধান মেনে চলতে হবে।’
রুকন সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন রাজবাড়ী জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির নুরুল ইসলাম। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ফরিদপুর অঞ্চল সহকারী মো. দেলোয়ার হোসাইন, ফরিদপুর অঞ্চল টিম সদস্য অবসরপ্রাপ্ত আবদুত তাওয়াব প্রমুখ।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০০৯ সালে রাজবাড়ী জেলা জামায়াতের রুকন সম্মেলন হয়েছিল। দীর্ঘ ১৫ বছর পর অনুষ্ঠিত সম্মেলনে নূরুল ইসলাম পুনরায় জেলা জামায়াতের আমির নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া ১৯ জন শুরা সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, যাঁরা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি নির্বাচিত করবেন। আগামী দুই বছর নবগঠিত কমিটি জেলার দায়িত্ব পালন করবেন। সম্মেলনে মোট ৫৩৭ জন ভোটারসহ আমন্ত্রিত জেলা জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা–কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীরা উপস্থিত ছিলেন।