সিলেটে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে দুটি কলেজ অধ্যক্ষের পদত্যাগ

হুসনে আরা (বাঁয়ে) ও এরশাদ আলীছবি: সংগৃহীত

সিলেটের দুটি কলেজে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে দুই কলেজের অধ্যক্ষ পদত্যাগ করেছেন। তাঁরা হলেন সিলেটে ব্লু বার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হুসনে আরা এবং সিলেটের গোলাপগঞ্জের ঢাকা দক্ষিণ সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এরশাদ আলী। আজ রোববার দুপুরে নিজ নিজ কলেজে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন তাঁরা।

রোববার সকাল থেকে ব্লু-বার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে ছাত্রছাত্রীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা যোগ দেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ হুসনে আরার বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা এবং অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ আনেন। বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা একপর্যায়ে স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রবেশ করে অধ্যক্ষকে তাঁর নিজ কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগপত্র লিখে অন্য শিক্ষকদের কাছে দিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করেন।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ব্লু-বার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের আরেক শিক্ষক দীপক চৌধুরীকে তাড়া করেন বিক্ষোভকারী এক দল শিক্ষার্থী। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী তাঁকে আগলে রেখে রিকশায় তুলে দিতে দেখা যায়।

ব্লু-বার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সিলেটের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক সুবর্ণা সরকার প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিষ্ঠানটিতে কয়েক দিন ধরে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হচ্ছেন, এমন খবর ছিল। তবে অধ্যক্ষ পদত্যাগের লিখিত কপি তাঁর কাছে রোববার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত পৌঁছায়নি।

এদিকে গোলাপগঞ্জের ঢাকা দক্ষিণ সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এরশাদ আলী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে রোববার দুপুর ১২টার দিকে পদত্যাগ করেন। তাঁর বিরুদ্ধে ১ আগস্ট কলেজে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সভা করার অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার সকাল থেকে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এসবের অভিযোগে তাঁর পদত্যাগ দাবি করে কলেজে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তিনি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে কলেজ ত্যাগ করেন।

পদত্যাগের বিষয় নিশ্চিত করে কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুর রহীম বলেন, ‘আমরা সব শিক্ষক অধ্যক্ষকে সভা করতে নিষেধ করেছিলাম। তিনি আমাদের কারও কথা না শুনে খেয়ালখুশিমতো আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এই সভা করেছিলেন।’