বিরামপুরে যে বাজারে প্রতিদিন বিক্রি হয় ১০ মণ রসগোল্লা
প্রায় ১২ কিলোমিটার দূর থেকে সীমান্তবর্তী কাটলা বাজারে মিষ্টি কিনতে এসেছেন আফজাল হোসেন। বাড়িতে নাতির আকিকার অনুষ্ঠান। মেহমানদের খাওয়ানোর জন্য বাজার থেকে ৩০ কেজি রসগোল্লা কিনলেন তিনি। দামে সাশ্রয়ী ও মানে ভালো হওয়ায় তিনি এখানে এসেছেন। তাঁর মতো শত শত ক্রেতা প্রতিদিন এ বাজারে আসেন রসগোল্লা কিনতে। বাজারের দোকানগুলোতে প্রতিদিন প্রায় ১০ মণ রসগোল্লা বিক্রি হয়।
এ বাজারের অবস্থান দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী কাটলায়। কাটলা হাইস্কুল–সংলগ্ন পূর্ব পাশে বাজারের প্রধান রাস্তা। এ রাস্তার ফুটপাতের লম্বা সারিতে আছে পাঁচটি দোকান। এ ছাড়া বাজারের বিভিন্ন গলিতে ছোট-বড় আরও ছয়টি মিষ্টির দোকান আছে। এসব দোকানে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রসগোল্লা বিক্রি হয়। আর সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত দোকানদারেরা পরের দিনের জন্য মিষ্টি বানিয়ে রাখেন।
কাটলা বাজারে প্রতি কেজি রসগোল্লা ২০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। এখানকার রসগোল্লা বিক্রির সময় গামলায় রস নিংড়ে বিক্রি করেন দোকানিরা। ফলে বহনের সময় রসের ঝামেলা নেই বলে জানালেন উপজেলার বিনাইল গ্রাম থেকে আসা ক্রেতা আজগর আলী।
কাটলা বাজারের ফুটপাতে রসগোল্লা বিক্রি করেন রেজাউল করিম। তাঁর বাবাও এখানে মিষ্টি বিক্রি করতেন। বাবার কাছ থেকেই তিনি মিষ্টি তৈরি ও ব্যবসা শিখেছেন। রসগোল্লা বিক্রি করেই তাঁর সংসার চলে, বাড়িঘর করেছেন, সামান্য জমিজমাও কিনেছেন।
রেজাউল করিম বলেন, এক মণ রসগোল্লা তৈরি করতে ৫২ কেজি চিনি, দেড় মণ দুধ, দেড় কেজি ময়দা ও এক মণ লাকড়ি লাগে। প্রতিদিন তাঁর দোকানে এক থেকে দেড় মণ রসগোল্লা বিক্রি হয়। খরচ বাদে এক মণ রসগোল্লা বিক্রি করে ৭০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা লাভ থাকে তাঁর। তবে সাপ্তাহিক হাটবার শুক্র ও সোমবার রসগোল্লা বিক্রি বেড়ে যায়, লাভও বেশি হয়। এ ছাড়া প্রতি কেজি দই ১৬০ টাকা দরে বিক্রি করেন। দিনে ৪০ কেজি দই বিক্রি করলে প্রায় ১ হাজার টাকা লাভ থাকে।
কাটলা হাটবাজার বণিক কমিটির সভাপতি ও মিষ্টি ব্যবসায়ী কোবাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা এখানকার দোকানে দই ও রসগোল্লা কিনতে আসেন। এখানকার বাজারে প্রতিদিন প্রায় ১০ মণ রসগোল্লা ও ৫ মণ দই বিক্রি হয়।