ইভটিজিংয়ের অভিযোগ এনে মারধর, ‘অপমান’ সইতে না পেরে নিজের প্রাণ নিলেন তরুণ

ফেনী জেলার মানচিত্র

ফেনীর পরশুরামে ইভটিজিংয়ের অভিযোগে মারধর করার পর অপমান সইতে না পেরে এক তরুণ বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। নিহত তরুণের নাম মো. নুরুল আফছার (২০)। তিনি পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চন্দনা গ্রামের আবু ইউছুপের ছেলে এবং পেশায় একজন নির্মাণশ্রমিক (রাজমিস্ত্রি) ছিলেন।

এলাকার এক তরুণীকে উত্ত্যক্ত( ইভটিজিং) করার অভিযোগে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তিন থেকে চারজন যুবক তাঁকে এলাকায় কাজের স্থান থেকে তুলে নিয়ে মারধর করেন।

নিহত আফছারের পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে পরশুরাম থানার পুলিশ জানায়, স্থানীয় এক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল আফছারের। বিষয়টি ওই তরুণীর পরিবার ও স্থানীয় কয়েকজন যুবক ভালোভাবে নেননি। গতকাল দুপুরে উপজেলার উত্তর রাজাপুর গ্রামের দোকানদান নুর নবীর ছেলে মো. মহিম ও তাঁর সহযোগীরা এক জোট হয়ে মো. নুরুল আফছারকে তাঁর কাজের স্থান থেকে জোর করে ধরে নিয়ে যান। এরপর ওই যুবকেরা আফছারকে উপজেলার রাজাপুর এলাকায় সিলোনিয়া নদীর পাশে নিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করেন।

এ ঘটনার পর আফছার অপমান সইতে না পেরে বাড়িতে গিয়ে কীটনাশক (বিষ) পান করেন। মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে সন্ধ্যায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ফেনী সদর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মো. আফছারের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় আজ শুক্রবার সকালে মো. নুরুল আফছারের ভাই মো. শাহজাহান বাদী হয়ে পরশুরাম মডেল থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় মো. মহিম ও তাঁর কয়েকজন সহযোগীকে আসামি করা হয়।
এ বিষয়ে মামলার আসামি মহিমের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মামলার পর থেকে তিনিসহ অন্য আসামিরা পলাতক বলে পুলিশ জানিয়েছে।

জানতে চাইলে স্থানীয় চিথলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জসিন উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আফছারকে কাজের জায়গা থেকে তুলে নিয়ে মারধর করা হয়েছে। এই অপমান সইতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাত হোসেন খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মামলার পর আসামি গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।