গাজীপুরে শেখ হাসিনা, মোজাম্মেল হক, জাহিদ হাসানসহ ১৭১ জনের নামে দুটি মামলা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গাজীপুরে আরও দুটি হত্যা মামলা হয়েছে। গত বুধবার কাশিমপুর ও গাছা থানায় দায়ের করা হয় এসব মামলা। দুই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (ওসি) মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এসব মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমসহ দলটির মোট ১৭১ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ রয়েছে।
নগরের গাছা থানার ওসি জিয়াউল ইসলাম জানান, থানাটিতে দায়ের করা হত্যা মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। এ মামলায় ১১৫ জনের নাম উল্লেখ করে ৩৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। মামলাটি করেন গাছা থানার পূর্ব কলমেশর এলাকার মো. রজ্জব আলী।
অন্যদিকে কাশিমপুর থানার ওসি জাহিদুল ইসলাম জানান, একই দিন কাশিমপুর থানায় হত্যাচেষ্টা মামলায় প্রধান আসামি করা হয় সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে। এতে ৫৬ জনের নাম উল্লেখ করে ৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। মামলাটি করেন মহানগরীর কাশিমপুরের লতিফপুর এলাকার মো. সোহেল রানা।
গাছা থানার মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে তাঁর ছেলে আরিফ ব্যাপারীকে (২৮) গত ২০ জুলাই মামলার আসামিরা তাঁদের হাতে থাকা অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যা করেন। মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, টঙ্গীর আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমানসহ ১১৫ জনের নাম উল্লেখ আছে। এতে মোট ৩৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
এ ছাড়া কাশিমপুর থানার মামলার বাদী সোহেল রানা এজাহারে উল্লেখ করেন, তিনি একটি কোম্পানির স্টেশনারি পণ্যের বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে বিভিন্ন দোকানে পণ্য সরবরাহ করেন। ৪ আগস্ট বিকেল চারটার দিকে কাশিমপুর থানাধীন চক্রবর্তী বাসস্ট্যান্ডে রাস্তার ওপর অবস্থান করছিলেন। ওই দিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র-জনতা চক্রবর্তী বাসস্ট্যান্ড অবস্থান করে বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় আ ক ম মোজাম্মেল হকসহ অন্য আসামি এবং ২০০-৩০০ জন ‘আওয়ামী সন্ত্রাসী’ বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র, রামদা, লাঠিসোঁটা নিয়ে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর আক্রমণ করে গুলি করতে থাকে। এ সময় একটি গুলি তাঁর ডান পায়ে হাঁটুর নিচে লেগে বের হয়ে চলে যায়। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
মামলায় উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, কাশিমপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন (৫০), সাধারণ সম্পাদক মীর আসাদুজ্জামান তুলা (৫০) প্রমুখ।