আমরা আমাদের প্রতিনিধি তৈরি করব, নেতা তৈরি করব না: সারজিস আলম
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, ‘আমি যদি সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাতারে না থাকতে পারি, তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হওয়ার নৈতিক অধিকার আমার থাকতে পারে না। আমরা আমাদের প্রতিনিধি তৈরি করব, নেতা তৈরি করব না। বিগত ১৬ বছরে কেউ যখন নেতা হয়ে উঠেছেন, তাঁর পা আর মাটি স্পর্শ করেনি। আমরা আমাদের ওই সব নেতা চাই না, যাঁদের পা মাটিতে পড়ে না।’
দিনাজপুরে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ‘জুলাই বিপ্লবকে সমুন্নত রাখতে এবং রাষ্ট্র পুনর্গঠনে বিপ্লবী ছাত্রজনতার করণীয়’ শীর্ষক ছাত্র সমাবেশে সারজিস আলম এ কথা বলেন। একই সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহও বক্তব্য দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় নুর হোসেন মাঠে আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে সারজিস আলম আরও বলেন, ‘আমরা ২০২৪ সালের গণ–অভ্যুত্থানের সহযোদ্ধা। তাহলে কেন আমাদের মধ্যে শোডাউন (মহড়া) দেওয়ার মনমানসিকতা থাকবে? বিগত ১৬ বছরে এই শোডাউন কারা দিয়েছে? একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যদি আমাদের পায়ে হেঁটে চলার মানসিকতা না থাকে, যদি শোডাউন দিয়ে চলতে হয়, তাহলে আমরা যাঁদের সাধারণ শিক্ষার্থী বলি, আমি কি তাঁদের কাতারে আছি?’
নেতৃত্ব তৈরির জন্য ছাত্র সংসদ চালুর দাবি জানিয়ে সারজিস আলম বলেন, ‘প্রতিবছর ছাত্র সংসদের নির্বাচন করলেই কেবল সুষ্ঠু নেতৃত্ব তৈরি সম্ভব। কেউ যদি দলীয় মনোনয়ন নিয়ে কোনো ক্ষমতায় যান কিংবা চেয়ারে বসে তিনি শুধু তাঁর ঊর্ধ্বতনদের সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করেন, লেজুড়বৃত্তির ছাত্ররাজনীতি নির্দিষ্ট পক্ষের স্বার্থকে বাস্তবায়নের চেষ্টা করেন, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আসল উদ্দেশ্য নয়।’
অনুষ্ঠানে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা আবারও মাথাচাড়া দিচ্ছে। গোপনে ভিডিও বার্তা দিচ্ছে। তারা যদি আবারও মাঠে নামে, প্রথমে টার্গেট করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই মধ্যবিত্ত পরিবারের। তাঁরা রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে পড়তে আসেন না। তাঁরা নিজের ও পরিবারের হাল ধরতে আসেন। ৫ আগস্টের পর একটা জেনারেশন কনফ্লিক্ট দেখা যাচ্ছে। জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদেরা তরুণ প্রজন্মের ত্যাগকে অবজ্ঞা করছেন।