বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমের করা আপিলের বিষয়ে আগামী রোববার সিদ্ধান্ত জানাবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আপিলের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে হাজির হয়ে হিরো আলম আপিল শুনানিতে অংশ নেন। এ সময় প্রার্থিতা ফেরতের বিষয়ে তাঁর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের সভাপতি কাজী রেজাউল হোসেন নানা যুক্তি তুলে ধরেন। শুনানি শেষে আপিলের বিষয়ে রোববার সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়।
শুনানি শেষে সিদ্ধান্ত জানাতে নির্বাচন কমিশনের দুই দিন সময় নেওয়ার বিষয়ে ক্ষুব্ধ হিরো আলম। হিরো আলম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আগামী সোমবার প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। আপিল শুনানির রায় হবে রোববার। যদি রায় বিপক্ষে যায়, তাহলে রায়ের কপি নিয়ে উচ্চ আদালতে যেতে হবে। সেখানেও সময় লাগবে। তাহলে রিট করবেন কখন? প্রচার–প্রচারণা চালাবেন কীভাবে?
দলীয় সিদ্ধান্তে দুটি আসন থেকে বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করায় বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসনে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণের জন্য তফসিল ঘোষণা করেছে ইসি। এই দুই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন হিরো আলম। ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর গরমিলের কারণ দেখিয়ে গত রোববার হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন উপনির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম।
হিরো আলমের পক্ষে আপিল শুনানিতে অংশ নেওয়া সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কাজী রেজাউল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, হিরো আলম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদীয় আসন দুটির প্রতিটিতে ন্যূনতম ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেন। ইসি থেকে ১০ জন ভোটারের স্বাক্ষর যাচাইয়ে পাঠানো হয়। যাচাই শেষে অভিযোগ আনা হয়, কয়েকজন ভোটারের স্বাক্ষরের মিল পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া দুজন ভোটারের নাম-ঠিকানা সঠিক নেই বলেও জানানো হয়। আপিল শুনানিতে তাঁরা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছেন, ভোটারদের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর সঠিক আছে। প্রয়োজনে ভোটারদের ইসিতে হাজির করা হবে। এ ছাড়া নাম-ঠিকানা সঠিক নেই বলে যে দুজন ভোটারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁদের স্বাক্ষরই দাখিল করা হয়নি।
১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর দাখিলের নিয়ম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে হিরো আলম বলেন, একজন নাগরিক হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকার আছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন আইনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর দাখিল বাধ্যতামূলক করা হলেও রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের জন্য এ শর্ত শিথিল করা হয়েছে। এটা শুধু বৈষম্যমূলক আচরণ নয়, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন যাতে না হয়, এটা একধরনের ষড়যন্ত্র। এভাবে পদে পদে হয়রানির শিকার হলে কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন না।
এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন হিরো আলম। যাচাই-বাছাইয়ের দুই দফায় তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। উচ্চ আদালতে গিয়ে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পান। ভোটের দিন তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটলে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই জানিয়ে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন হিরো আলম।