নারায়ণগঞ্জে চারটি আসনে সাত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল, বৈধ ৩৮
নারায়ণগঞ্জে পাঁচটি সংসদীয় আসনে সাতজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে তিনজন রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থী এবং চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। যাচাই–বাছাইয়ে ৩৮ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হকের কার্যালয়ে যাচাই–বাছাই শেষে এসব তথ্য জানানো হয়। এ সময় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কাজী মো. ইস্তাফিজুল ইসলাম, সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা ও নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকতা আফরোজা খাতুনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে ১০ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে জামানতের টাকা জমা না দেওয়ায় বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির আফাজউদ্দিন মোল্লার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। এ আসনে বাকি ৯ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।
যাঁদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর বীর প্রতীক ও তাঁর ছেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী গাজী গোলাম মূর্তজা, রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহাজাহান ভূঁইয়া, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ শহীদুল ইসলাম, জাকের পার্টির জোবায়ের আলম ও জাতীয় পার্টির সাইফুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান ও জয়নাল আবেদীন।
মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারী স্থানীয় ভোটার না হওয়ায় নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেস দলীয় প্রার্থী জি কে মামুন দিদারের মনোয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফুল ইসলাম ক্রেডিট কার্ডের ঋণ খেলাপি হওয়ায় তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। চার প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের নজরুল ইসলাম (বাবু), জাতীয় পার্টির আলমগীর সিকদার (লোটন), তৃণমূল বিএনপির আবু হানিফ ও জাকের পার্টি শাহজাহান।
নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ১৩ প্রার্থীর মধ্যে বাছাইয়ে দুই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। জামিনদাতা হিসেবে ঋণ খেলাপি হওয়ায় জাকের পার্টির জামিল মিজি ও বাংলাদেশ কংগ্রেস দলের সিরাজুল হকের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
১১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের আবদুল্লাহ আল কায়সার, আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র এরফান হোসেন, মারুফুল ইসলাম ও এইচ এম মাসুদ, জাতীয় পার্টি সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন (খোকা), বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের মজিবুর রহমান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের এ বি এম ওয়ালিউর রহমান, বিকল্পধারা বাংলাদেশের নারায়ণ দাস, সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের মো. আরিফ, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির আসলাম হোসাইন ও স্বতন্ত্র রুবিয়া সুলতানা।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) ১১ প্রার্থীর মধ্যে বাছাইয়ে দুই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। জমা দেওয়া ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর সঠিক না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী রাশেদুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। ২০ ও ২১ নম্বর ঘর সঠিকভাবে পূরণ না করায় জাতীয় পার্টির স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী দেলোয়ার হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তিনিও মনোনয়নপত্রের সঙ্গে ১ শতাংশ ভোটার স্বাক্ষর দাখিল করেননি।
এই আসনে ৯ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। বৈধ প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম ওসমান, জাকের পার্টির মুরাদ হোসেন, জাতীয় পার্টির ছালাউদ্দিন খোকা, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের গোলাম মোর্শেদ, তৃণমূল বিএনপির আলী হোসেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির সেলিম আহমেদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সৈয়দ হোসেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শহীদ উন-নবী।
নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনে পাঁচ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। বাছাই শেষে সবার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। বৈধ প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান, তৃণমূল বিএনপির আবদুল হামিদ ভাসানী, জাকের পার্টির মোর্শেদ হাসান, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ এ এম এম একরামুল হক ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি ছামসুল ইসলাম।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কাজী মো. ইস্তাফিজুল হক আকন্দ প্রথম আলোকে বলেন, নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি সংসদীয় আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন ৪৫ জন প্রার্থী। এর মধ্যে বাছাইয়ে সাতজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। বাছাই শেষে ৩৮ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ১৬ ডিসেম্বর।