বিদ্যালয়টির নতুন ভবনের কাজ শেষ হওয়ার কথা ৯ মাসে, হয়নি ৪ বছরেও
পুরোনো ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে শ্রেণিকক্ষে পড়ে রয়েছে। ছাদের বিমের পলেস্তারা খসে রড বেরিয়ে রয়েছে।
বিদ্যালয় ভবন জরাজীর্ণ হওয়ায় নতুন ভবনের জন্য বরাদ্দ পাওয়া যায়। কথা ছিল ৯ মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে নতুন ভবনের। কিন্তু চার বছর পরও ওই নতুন ভবনে ক্লাস করতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। ধীরগতিতে চলছে ভবনের নির্মাণকাজ। পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার বেতাগী-সানকিপুর ইউনিয়ন ভিডিসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ ভোগান্তি পোহাচ্ছে।
গত রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, পুরোনো একতলা ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। একতলা পাকা ভবনে চারটি কক্ষ রয়েছে। একটি কক্ষে পাঠাগার ও শিক্ষকদের বসার জন্য কয়েকটি চেয়ার ও একটি টেবিল রয়েছে। অপর তিনটি কক্ষে ক্লাস চলছে। এদিকে পুরোনো ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে শ্রেণিকক্ষে পড়ে রয়েছে। ছাদের বিমের পলেস্তারা খসে রড বেরিয়ে রয়েছে। লোহার রড মরিচা ধরে ক্ষয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, ১৯৮৮ সালে ছোট একটি টিনশেডের ঘরে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ২০০০ সালে তিন কক্ষের একটি একতলা পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। পুরোনো ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়লে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) একটি নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ৯৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা ব্যয়ে দোতলা ভবন নির্মাণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়।
ঠিকাদার মো. গিয়াস উদ্দিন ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ের কাজ শুরু করেন। ভবনটির ভিত্তির কাজ শেষে একতলার ছাদের সেন্টারিংয়ের কাজ শুরু করেন। এরপর ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে দেন। দরপত্র অনুযায়ী, ২০২১ সালের ৩০ জুন নতুন ভবন নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ৯ মাসের মধ্যে ভবন নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় ঠিকাদার সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত কাজের সময়সীমা বাড়ানো হয়। কিন্তু ওই সময়সীমা পার হলেও ভবন নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। গত রোববার পর্যন্ত ভবনের কাজ শুরু হয়নি।
এদিকে বিদ্যালয়ের মাঠের নির্মাণসামগ্রী স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বালু, পাথর, খোয়া, ইট, রড, কাঠ-বাঁশ ইত্যাদি। মাঠে নির্মাণসামগ্রী রাখায় শিক্ষার্থীরা মাঠে খেলাধুলা করতে পারছে না।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আপন চন্দ্র অধিকারী জানান, মাঠে খেলাধুলা করতে পারছে না তারা। তবে নতুন ভবনের কাজ শেষ হলে ভালো পরিবেশে লেখাপড়ার সুযোগ পাবে তারা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রব জানান, বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ১৩০ জন শিক্ষার্থী আছে। শ্রেণিকক্ষের সংকট থাকায় দুই পালায় চলছে পাঠদান কার্যক্রম। তবে শুধু শিক্ষার্থীরাই নয় শিক্ষকেরাও আতঙ্কে থাকেন, কখন ছাদের পলেস্তারা খসে গায়ে পড়ে।
ঠিকাদার গিয়াস উদ্দিন জানান, প্রথমে করোনা, এরপর গরমের কারণে নির্মাণশ্রমিকেরা কাজে ফিরছিলেন না। তবে শ্রমিক পাঠানো হয়েছে।
দশমিনা উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মরিয়ম পারভীন জানান, নির্ধারিত সময়ে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. মকবুল হোসেন জানান, কাজটি শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে।