ছোট্ট নাতনিকে বাঁচাতে গিয়ে ট্রাক্টরের নিচে দাদি, প্রাণ গেল দুজনেরই

সড়ক দুর্ঘটনা
প্রতীকী ছবি

বাড়ির নিকটবর্তী সড়কের পাশ থেকে লাকড়ি সংগ্রহ করছিলেন রহিমা বেগম (৫৫)। নতুন হাঁটতে শেখা ১৬ মাস বয়সী নাতনি রাফিয়া আক্তার বাড়ি থেকে বের হয়ে দৌড়ে দাদির কাছে আসতে থাকে। এ সময় পেছন দিকে মাটিবাহী একটি ট্রাক্টর আসতে দেখে ছুটে যান রহিমা।

ট্রাক্টরের সামনে থেকে নাতনিকে ধাক্কা দিতে গিয়ে নিজেই পড়ে যান ট্রাক্টরের নিচে। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। আহত হয় নাতনি রাফিয়া। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যায় শিশুটিও।

মঙ্গলবার দুপুরে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদীঘি ইউনিয়নের দৌলতপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত রহিমা বেগম ওই এলাকার পবির উদ্দিনের স্ত্রী। শিশু রাফিয়া আক্তার পবির উদ্দিন-রহিমা বেগম দম্পতির ছেলে রবিউল ইসলামের মেয়ে। এ ঘটনায় ট্রাক্টরচালক পলাশ চন্দ্র রায়কে (২২) আটক করেছে পুলিশ।

বোদা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু বক্কর সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পর স্থানীয়দের সহায়তায় ট্রাক্টরচালককে আটক ও ট্রাক্টরটি জব্দ করা হয়েছে। ওই পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।

এ বিষয়ে কথা হয় ময়দানদীঘি ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফজলুর রহমানের সঙ্গে। স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, লাকড়ি হিসেবে ব্যবহার করার জন্য বাড়ির পাশের ময়দানদীঘি-বাগানবাড়ি সড়কের পাশে থাকা ইউক্যালিপটাসগাছের ডাল ভাঙছিলেন রহিমা বেগম। এ সময় তাঁর নাতনি রাফিয়া বাড়ি থেকে দৌড়ে দাদির কাছে যাচ্ছিল। পেছন দিক থেকে একটি দ্রুতগতির ট্রাক্টর আসতে দেখে নাতনিকে বাঁচাতে এগিয়ে যান রহিমা। নাতনিকে ধাক্কা দিতে গিয়ে নিজেই পড়ে যান ট্রাক্টরের নিচে। এতে ট্রাক্টরের চাকা তাঁর কোমরের ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান রহিমা বেগম।

ফজলুর রহমান আরও বলেন, ট্রাক্টরের ধাক্কায় আঘাত পাওয়া শিশু রাফিয়াকে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। সেখানে শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। ঠাকুরগাঁওয়ে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।