নোয়াখালীতে গৃহবধূকে খুন করে ঢাকায় গিয়ে আত্মগোপন

গৃহবধূকে খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার খালেদ সাইফুল্যাহ। আজ দুপুরে বেগমগঞ্জ থানার সামনেছবি: প্রথম আলো

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় আট দিন আগে প্রকাশ্যে সড়কের ওপর এক গৃহবধূকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম খালেদ সাইফুল্যাহ (২৮)। আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাঁকে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। এর আগে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নরসিংদী জেলার মনোহরদী থানাধীন মৌলভীবাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ বলছে, খুনের পর আসামি খালেদ তাবলিগ জামাতে যোগ দেন।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার খালেদ সাইফুল্যাহ বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর হাজীপুর এলাকার চিরণভূঁইয়ার নতুন বাড়ির আবদুল কাইয়ুম লিটনের ছেলে। অপর দিকে ছুরিকাঘাতে নিহত শাহনাজ আক্তার (৩০) উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর হাজীপুর এলাকার নোয়াবাড়ির কুয়েতপ্রবাসী জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বছরখানেক আগে শাহনাজের ব্যবহৃত মুঠোফোন নষ্ট হয়ে গেলে সেটি বাজার থেকে ঠিক করে আনতে দেন চাচাতো দেবর খালেদকে। ওই সময় খালেদ মুঠোফোন থেকে স্বামীকে পাঠানো ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও নিজের মুঠোফোনে নিয়ে নেন। এরপর ছবি-ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে নানাভাবে প্রতারণা করেন এবং টাকাও হাতিয়ে নেন। এর জেরে ১৭ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হাজীপুর এলাকার মাইল্যা বাদশা মিয়ার বাড়ির সামনের সড়কে গৃহবধূকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন খালেদ। একই সময় পুত্রবধূকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে সঙ্গে থাকা শ্বশুর রেজাউল হককেও (৮০) কুপিয়ে জখম করা হয়। ঘটনার পর খালেদ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান।

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আব্দুল্লাহ আল ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পরপরই আসামি খালেদ ফেনী থেকে বাসে সরাসরি ঢাকার কাকরাইল জামে মসজিদে গিয়ে তাবলিগ জামাতের সঙ্গে যোগ দিয়ে আত্মগোপন করেন। পরবর্তী সময়ে নরসিংদী জেলার মনোহরদী থানার মৌলভীবাজার এলাকার নলুয়া জামে মসজিদে গিয়ে তাবলিগ জামাতের সঙ্গে যোগ দেন। সেখান থেকে জামাত শেষ পর্যায়ে অপর মসজিদে যাওয়ার আগে তাঁকে গ্রেপ্তার করে বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার আসামি খালেদ সাইফুল্যাহকে আজ দুপুরে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। একই মামলায় অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।