নড়াইল সদরে পুনর্গণনা ও পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানালেন পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী
নড়াইল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী তোফায়েল মাহমুদ। আজ বুধবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে নড়াইল শহরের আলাদাতপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান তিনি। এর আগে বেলা তিনটার দিকে একই দাবিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
তোফায়েল মাহমুদ নড়াইল জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান। সংবাদ সম্মেলন ও লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, গতকাল মঙ্গলবার নির্বাচনে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র থেকে তাঁর নির্বাচনী এজেন্টদের বের করা দেওয়া হয়েছে। ভোটারদের ভোট প্রদানে বাধা দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি কেন্দ্রে প্রচুর পরিমাণে জাল ভোট দেওয়া হয়েছে, যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ কারণে সদরের চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের সব কেন্দ্র এবং মাইজপাড়া ইউনিয়নের চারিখাদা স্কুল কেন্দ্র, আইড়িয়া ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর স্কুল কেন্দ্র ও দত্তপাড়া স্কুল কেন্দ্রের ভোট যাচাই-বাছাইসহ পুনরায় ভোট গ্রহণ করা দরকার।
বিতর্কিত ভোটকেন্দ্রগুলোয় পুনরায় ভোট গ্রহণ, পুনর্গণনা, ব্যালটের মুড়ি অংশ ও ব্যালট যাচাই-বাছাইসহ সামগ্রিক নির্বাচন পুনরায় গ্রহণের দাবি জানান তোফায়েল মাহমুদ।
তোফায়েল মাহমুদ আরও বলেন, নড়াইল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ভোট পড়েছে ৩৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ। অথচ চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের সীবানন্দপুর কেন্দ্রে ৮১ শতাংশ ভোট কাস্ট করানো হয়েছে, যা অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এ ছাড়া বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে তাঁকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে; যার পরিপ্রেক্ষিতে রেজাল্ট শিটে প্রার্থীর এজেন্টরা স্বাক্ষর করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তাই বিতর্কিত ভোটকেন্দ্রগুলোয় পুনরায় ভোট গ্রহণ, পুনর্গণনা, ব্যালটের মুড়ি অংশ ও ব্যালট যাচাই-বাছাইসহ সামগ্রিক নির্বাচন পুনরায় গ্রহণের দাবি তাঁর।
এ ব্যাপারে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শাশ্বতী শীল বলেন, ‘চেয়ারম্যান প্রার্থী তোফায়েল মাহমুদ একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি পুনরায় ভোট গণনা চান। তবে ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর পুনরায় গণনার এখতিয়ার আমার নেই।’
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নড়াইল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিন প্রার্থী অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে মো. আজিজুর রহমান ভূঁইয়া (আনারস প্রতীক) ৪৫ হাজার ৮৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তোফায়েল মাহমুদ (ঘোড়া প্রতীক) ৪২ হাজার ৩০৬ ভোট পেয়েছেন। দোয়াত-কলম প্রতীকের প্রার্থী মিলন মল্লিক ১ হাজার ৪৩৪ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিন প্রার্থীর মধ্যে টিউবওয়েল প্রতীকের প্রার্থী ৪৭ হাজার ৫৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এস এম ময়নুল ইসলাম (তালা প্রতীক) ৩৩ হাজার ২২৭ ভোট পেয়েছেন। আরেক প্রার্থী মো. সাহিদুজ্জামান (মাইক প্রতীক) পেয়েছেন ৫ হাজার ৪৬৪ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫২ হাজার ৮৫৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন নাজনীন সুলতানা (ফুটবল প্রতীক)। তাঁর একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী সুন্দরী বালা বাগচী (কলস প্রতীক) পেয়েছেন ৩১ হাজার ৫১৪ ভোট।