বরিশাল সরকারি আইএইচটি বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের নির্দেশ
সংঘাত এড়াতে বরিশাল সরকারি ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরের মধ্যে আবাসিক শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস-ছাত্রীনিবাস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ছাত্রাবাস-ছাত্রীনিবাসও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাই আজ দুপুরের মধ্যে আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এ আদেশ কার্যকর থাকবে। তবে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও প্রতিষ্ঠানের দাপ্তরিক সব ধরনের কাজ চলবে।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ মানস কৃষ্ণ কুণ্ডু বলেন, শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবিতে আইএইচটির পরীক্ষাসহ একাডেমিক কার্যক্রম কিছুদিন আগে থেকেই বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে তৃতীয় ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দ্বন্দ্বে প্রতিষ্ঠানে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। এই দ্বন্দ্বে জুনিয়র শিক্ষার্থীদের দুই দফায় মারধরের ঘটনায় গত সোমবার এক শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়া আট শিক্ষার্থীকে ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, সতর্ক করা হয়েছে আরেক শিক্ষার্থীকে।
মানস কৃষ্ণ কুণ্ডু আরও বলেন, ওই আদেশ দেওয়ার পরে সোমবার রাতে ছাত্রাবাসে উত্তেজনা তৈরি হয়। ছাত্রদের মধ্যে পুনরায় সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয় বলে তাঁরা শুনেছেন। সবদিক বিবেচনা করে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, তাই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
আইএইচটি প্রশাসন সূত্র জানায়, ১০ নভেম্বর বরিশাল আইএইচটি শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনায় চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ২১ নভেম্বর দোষী শিক্ষার্থীদের শাস্তির সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। সে অনুযায়ী অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছয় দফা দাবি আদায়ে ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) বরিশালের শিক্ষার্থীরা কিছুদিন ধরে কর্মসূচি পালন করে আসছেন। তবে সম্প্রতি সিনিয়র (জ্যেষ্ঠ) ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষার্থী কর্মসূচিতে যাওয়া না–যাওয়া নিয়ে নানা কথা বলা শুরু করেন। কিন্তু যাঁরা এগুলো করছিলেন, তাঁদের শুরু থেকে কর্মসূচির সঙ্গে দেখা যায়নি। আর এ নিয়ে জুনিয়র শিক্ষার্থীরা আলোচনা করায় ১০ নভেম্বর দুপুরে দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালান তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। এরপর পর্যায়ক্রমে ছাত্রাবাসের ভেতরে থাকা জুনিয়র শিক্ষার্থীদের খুঁজে খুঁজে মারধর করেন তৃতীয় বর্ষের ৮-১০ জন শিক্ষার্থী। এতে ১০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ায় সোমবার রাত থেকে প্রতিষ্ঠানটিতে পুনরায় উত্তেজনা শুরু হয়।