আন্দোলনে নিহত রায়হানের মা বললেন ‘ছেলে বেঁচে নেই, ফল দিয়ে কী হবে?’
ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত মো. রায়হান এইচএসসি পাস করেছেন। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁর ফলাফল জানতে পারেন পরিবারের সদস্যরা। এ সময় তাঁরা অঝোরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
নিহত মো. রায়হানের বাড়ি নোয়াখালীর সদর উপজেলার নোয়ান্নই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব দুর্গানগর গ্রামে। তিনি রাজধানীর গুলশান কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
রায়হানের বাবা মো. মোজাম্মেল হোসেন ঢাকার বাড্ডায় একটি ভবনের কেয়ারটেকার হিসেবে চাকরি করেন। ওই ভবনের পাশেই একটি মেসে থাকতেন রায়হান। গত ৫ আগস্ট বাড্ডা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।
পরিবারের সদস্যরা জানান, ৫ আগস্ট বাড্ডা এলাকায় ছাত্র-জনতার বিজয় মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন রায়হান। এ সময় পুলিশের গুলিতে তাঁর মৃত্যু হয়। পরদিন তাঁর লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
রায়হান তাঁর বাবা মো. মোজাম্মেল হোসেন ও মা আমেনা বেগমের একমাত্র ছেলে ছিলেন। পরিবারের সদস্যরা জানান, এইচএসসিতে জিপিএ ২.৯২ পেয়ে পাস করেছেন রায়হান।
রায়হানের বোন ঊর্মি আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ভাই মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তাঁর আচার-আচরণও ভালো ছিল। তাঁর জন্য আমার বাবা-মা সব সময় কান্না করেন। আজ পরীক্ষার ফলাফলের খবর শুনে বাবা-মা আরও বেশি কান্না করছেন। আমার ভাই বেঁচে থাকলে আজ অনেক খুশি হতেন।’
জানতে চাইলে রায়হানের মা আমেনা খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলে বেঁচে নেই, তার এই ফল দিয়ে কী হবে? নিজেরা না খেয়ে সন্তানকে খাইয়েছি। তাকে ঢাকায় পড়ালেখা করিয়েছি। তার অনেক স্বপ্ন ছিল। সব স্বপ্ন বুলেটে শেষ হয়ে গেছে।’ আমেনা খাতুন আরও বলেন, ‘রায়হানের আরও ভালো রেজাল্ট করার কথা। সে মেধাবী ছাত্র ছিল। রায়হানের পাস করার খবর শুনে তার বাবাও কান্না করছেন।’