মাদারীপুরে ২ সন্তানকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় মা গ্রেপ্তার
মাদারীপুর সদর উপজেলায় দুই শিশুসন্তানকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় অভিযুক্ত মা পূর্ণিমা রানী বৈদ্যকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানী ঢাকার কাকরাইল এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পূর্ণিমা রানী সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের শ্রীনদী এলাকার বাসিন্দা মানিক বৈদ্যর স্ত্রী। পুলিশের দাবি, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পূর্ণিমা তাঁর দুই সন্তানকে পুড়িয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে সদর উপজেলার ঝিকরহাটি এলাকায় একতলা টিনশেড ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন মানিক বৈদ্য। বাড়ির মালিক সাবেক সেনাসদস্য গোলাম মাওলা মাতুব্বর সপরিবার ঢাকায় থাকেন। মাসখানেক আগে মানিককে একটি চুরির মামলায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে মানিকের ঘরে আগুন দেখতে পান প্রতিবেশীরা। পরে ঘরের দরজা ভেঙে পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ফায়ার সার্ভিস। তারা ঘরের ভেতর থেকে দেড় বছর বয়সী এক শিশুর লাশ উদ্ধার করে। এ সময় গুরুতর আহতাবস্থায় আরেক শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, শিশু দুটির বাবা মানিক বৈদ্য চার থেকে পাঁচটি মামলার আসামি। একটি মামলায় তিনি কারাগারে আছেন। মানিকের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমার দীর্ঘদিন ধরে কলহ চলছিল। সম্প্রতি মানিক আরেকটি বিয়ে করবেন জানানোর পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। তখন পূর্ণিমা রাগে-অভিমানে মানিকের সংসার থেকে চলে যাবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন। এ জন্য তিনি ঘরে আগুন দিয়ে পালিয়ে যান।
ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী আরও বলেন, ঘটনার পর থেকেই পূর্ণিমাকে খুঁজতে থাকে পুলিশ। তাঁকে আজ ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘরে আগুন দিয়ে তাঁর সন্তানদের হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ শিশু দুটির দাদা কালী দাস বৈদ্য বাদী হয়ে পূর্ণিমা ও তার মা রেবা রানী বৈদ্যকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। নিহত দুই শিশুর লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।