মানিকগঞ্জে ট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষে নানা-নাতিসহ নিহত ৩
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে নানা ও নাতিসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার সকালে সদর উপজেলার আউটপাড়া এলাকায় মানিকগঞ্জ-হেমায়েতপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। আহত হয়েছেন অটোরিকশায় থাকা অপর দুজন।
নিহত তিনজন হলেন মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার দক্ষিণ চারিগাঁও গ্রামের জসিম তালুকদার (৫০), তাঁর নাতি (মেয়ের ছেলে) তাসিন আহমেদ (৫) ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক শাহিনুর রহমান (৪৫)। তাঁর বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বরুন্ডি গ্রামে।
আহত দুজন হলেন জসিমের স্ত্রী জ্যোৎস্না বেগম (৪৫) ও ছোট মেয়ে হামজা আক্তার (৩)। আহত জ্যোৎস্নাকে জেলা সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে এবং হামজাকে মানিকগঞ্জ কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন।
স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয় সূ্ত্রে জানা যায়, প্রায় দেড় যুগ ধরে মানিকগঞ্জ সদরের নতুন বসতি এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকতেন জসিম উদ্দিন। তিনি লেপ-তোশক তৈরির কাজ করতেন। গত শনিবার স্ত্রী জ্যোৎস্না, নাতি তাসিন ও ছোট মেয়ে হামজা আক্তারকে নিয়ে জেলা সদরের বালিরটেক এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান জসিম। আজ সকালে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাঁরা একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে নতুন বসতি এলাকার বাড়িতে ফিরছিলেন। অটোরিকশাটি আজ সকাল ১০টার দিকে আউটপাড়া এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা মাটিবহনকারী একটি ড্রাম ট্রাকের সঙ্গে সেটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই জসিম তালুকদার মারা যান। স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে নেওয়ার পরপরই শিশু তাসিন আহমেদ ও অটোরিকশাচালক শাহিনুর রহমান মারা যান।
আজ বেলা একটার দিকে সদর হাসপাতালে গিয়ে জসিমের মেয়ে মিম আক্তারকে (১৬) আহাজারি করতে দেখা যায়। হাসপাতালে আসা এক প্রতিবেশী তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়া চেষ্টা করেন। মিম আক্তার বলছিল, ‘আমাদের কী হয়ে গেল! এখন আমাদের কী হইব?’
জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শাহরিয়ার কবির বলেন, হাসপাতালে ভর্তি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত নারীর (জ্যোৎস্না) শারীরিক অবস্থা এখনো শঙ্কামুক্ত নয়। তাঁকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাবিল হোসেন বলেন, তিনজনের লাশের সদর হাসপাতলে আছে। ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। ট্রাকের চালক ও সহকারীকে আটকের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।