মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা আহত সীমান্তরক্ষীদের হাসপাতালে ভর্তি

আরাকান আর্মির হামলার মুখে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) সদস্যরা পালিয়ে বাংলাদেশের ঘুমধুম সীমান্ত ফাঁড়ির ভবনের পাশে আশ্রয় নেনছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতের জেরে এ পর্যন্ত দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৯৫ জনের বাংলাদেশে আসার তথ্য জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত দুজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আরও কয়েকজনকে উখিয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে সেই সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে গতকাল রোববার রাত ১১টার দিকে মিয়ানমারের ঢেঁকিবনিয়া সীমান্তচৌকি ঘিরে গোলাগুলি শুরু হয়ে। আজ সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গোলাগুলি চলে। এরপর তীব্র গোলাগুলি বন্ধ হয়। তবে বেলা ১১টা ২৪ মিনিটে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী হেলিকপ্টার থেকে গতকাল আরাকান আর্মির দখল করা বিজিপির তুমব্রু রাইট ক্যাম্পে আক্রমণ চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আরাকান আর্মিও হেলিকপ্টার লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছে।

আরও পড়ুন

এমন অবস্থায় আজ সকালে তুমব্রু, কোনারপাড়াসহ সীমান্তের পরিস্থিতি আতঙ্কের হয়ে উঠেছে। ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু ক্যাম্পপাড়া, মাঝেরপাড়া, কোনারপাড়া এলাকার মানুষ আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। সীমান্ত এলাকার সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শান্তনু কুমার দাশ।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিরাপত্তার কারণে বন্ধ রয়েছে। আজ সোমবার সকালে তুমব্রু পশ্চিমকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

এদিকে বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ৯৫ জনের মধ্যে ১৫ জন আহত রয়েছেন। আহত কয়েকজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আবার প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. আশিকুর রহমান বলেন, মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দুই সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিজিপির চিকিৎসাধীন ওই দুই সদস্য হলেন রি লি থাইন (২২) ও জা নি মং (৩০)।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিজিপি সদস্যদের মধ্যে গুরুতর আহত দুজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এবং কয়েকজনকে উখিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন

মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৮৩ কিলোমিটার। এর বড় অংশ পড়েছে বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলায়। কয়েক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় যুদ্ধ জোরালো করেছে আরাকান আর্মিসহ কয়েকটি গোষ্ঠী। তারা সম্মিলিতভাবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। এর মধ্যে কোনো কোনো সীমান্ত শহর দখল করে নিয়েছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা এ সংঘাতের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় সতর্ক অবস্থানের কথা জানিয়েছে কক্সবাজার ও বান্দরবানের জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

আরও পড়ুন