আবু সাঈদ হত্যায় দুই মামলা একসঙ্গে চলতে বাধা নেই

রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ ছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। গত ১৬ জুলাই শিক্ষার্থীদের মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্কের মোড়ে এলে তিনি ছিলেন সবার আগে। একপর্যায়ে পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়তে শুরু করলেও সাঈদ দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকেন। তাঁর এক হাতে ছিল লাঠিছবি: যমুনা টেলিভিশনের ভিডিও চিত্র থেকে নেওয়া

রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হওয়ার ঘটনায় দুটি হত্যা মামলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি আবু সাঈদের বড় ভাইয়ের, অন্যটি পুলিশের। এ দুই মামলা একসঙ্গে চলতে বাধা নেই বলে আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলা দুটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) রংপুরকে।

গতকাল সোমবার রাতে সাঈদ হত্যা মামলার আইনজীবী রোকনুজ্জামান রোকন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গত রোববার এ–সংক্রান্ত আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রংপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার জাকির হোসেন বলেন, দুই মামলার তদন্ত কীভাবে চলবে, সে বিষয়ে গত ২৭ আগস্ট আদালতে আবেদন করা হয়েছিল। আদালত বলেছেন, দুই মামলার একসঙ্গে তদন্তে বাধা নেই।

সাঈদ হত্যা মামলার আইনজীবী রোকনুজ্জামান রোকন বলেন, আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে গত ১৭ জুলাই তাজহাট থানায় একটি মামলা করে। পরবর্তী সময়ে আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী গত ১৮ আগস্ট আরও একটি মামলা করেন। দুটি মামলাই তদন্ত করছে পিবিআই।

রংপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার গত ২৭ আগস্ট দুই মামলার করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে রংপুর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উভয় মামলার একসঙ্গে তদন্ত চলবে বলে গত ১ সেপ্টেম্বর আদেশ দেন রংপুরের কোতোয়ালি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতের বিচারক।

গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর ফটকের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ছিলেন তিনি।

আবু সাঈদের মৃত্যুর পরদিন গত ১৭ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিভূতিভূষণ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। সেই মামলায় আসামি করা হয়েছিল আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের।

অন্যদিকে পুলিশের হত্যা মামলার এক মাস পর গত ১৮ আগস্ট রংপুর মেট্রোপলিটন আমলি আদালতে হত্যা মামলা করেন আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী। ওই মামলায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ৩০ থেকে ৩৫ জনকে আসামি করা হয়। আসামিদের মধ্যে আছেন পুলিশের তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, পুলিশের রংপুর রেঞ্জের তৎকালীন ডিআইজি আবদুল বাতেন, রংপুর মহানগর পুলিশের তৎকালীন কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান প্রমুখ। এ ছাড়া বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ সভাপতি পোমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক শামিম মাহফুজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক আসাদুজ্জামান মণ্ডল, গণিত বিভাগের শিক্ষক মশিউর রহমানসহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।